শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রাম আদালত কার্যকর হলে মামলার জট কমবে : তাজুল

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ৩০ নভেম্বর ২০২০, ১০:২৬
রাজধানীর এক হোটেলে রোববার আয়োজিত পরামর্শ সভায় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম -যাযাদি

দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে গ্রাম আদালতকে কার্যকর ও শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। গ্রাম আদালতকে শক্তিশালী করতে পারলে জেলা পর্যায়ের আদালতসমূহে মামলার সংখ্যা উলেস্নখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সে জন্যই সরকার গ্রাম আদালতকে যুগোপযোগী, জনবান্ধব ও অধিকতর কার্যকরী করার লক্ষ্যে 'গ্রাম আদালত আইন-২০০৬' সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান তিনি। এ সম্পর্কিত আইনি কাঠামো সংস্কার এবং সংশোধনীর ক্ষেত্রসমূহ চূড়ান্তকরণের উদ্দেশ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ রোববার জাতীয় পর্যায়ের একটি পরামর্শ সভা আয়োজন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপির সহায়তায় ঢাকার একটি হোটেলে এই পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়। পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। শহর ও গ্রাম উভয় স্থানের মানুষের জন্য সরকারে প্রতিশ্রম্নতি রয়েছে। আমাদের অবশ্যই বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ সুবিধা দিতে হবে। গ্রাম আদালত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি দারুণ বিষয়। কারণ অনেক মানুষ ভুল বোঝাবুঝির কারণে আদালতের দ্বারস্থ হন, ফলে সেখানেও চাপ বেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত ৩৭ লাখ মামলা বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। খুব ছোট ছোট বিষয় নিয়েও মামলা হচ্ছে। আমি মনে করি আমরা গ্রাম আদালতকে কার্যকর করতে পারলে আদালতের ওপর চাপ অনেকাংশে কমে যাবে। এর ফলে মানুষই সুবিধা পাবে, তাদের সময়-অর্থ সবই বেঁচে যাবে। এ সভায় শিখন, সুপারিশ, মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন ও প্রতিফলন এবং অর্জিত অভিজ্ঞতা ইত্যাদির আলোকে গ্রাম আদালতের আইনি কাঠামো সংশোধনীর প্রস্তাবনা বিষয়ে বক্তাদের প্রদত্ত সুচিন্তিত অভিমত গ্রামপর্যায়ে স্থানীয় বিচারব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে, জেলা পর্যায়ের আদালতগুলোতে মামলার সংখ্যা উলেস্নখযোগ্য হারে হ্রাস করতে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গ্রাম আদালত সক্রিয় করার কার্যক্রম পরিচালনায় এক দশকজুড়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরকারের পাশে থাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউএনডিপি বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানান মন্ত্রী। সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, গ্রাম আদালতের মতো ইমিউক্যাবল সলিউশনের দিকে যদি আমরা যেতে পারি তাহলে সরকারি কর্মকর্তা এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দ্বারা পরিচালিত এই মামলাগুলো সহজে দ্রম্নত নিষ্পত্তি হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেনসে তিরিঙ্ক ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মরণ কুমার চক্রবর্তী, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিলস্নাহ ফারুকী, প্রকল্প এলাকা থেকে আগত জেলা প্রশাসকবৃন্দ এবং বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপক সরদার এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ও বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আইন সংশোধনবিষয়ক পরামর্শক মো. তাজুল ইসলাম তার মূল নিবন্ধে বলেন, আইনটি সংশোধনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রাম আদালতের আর্থিক এখতিয়ার বৃদ্ধি, অন্যান্য আইনের সাথে সামঞ্জস্য ও সুস্পষ্টতা আনয়ন, গ্রাম আদালত পরিচালন প্রক্রিয়া সহজতর করা, সেবা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে গ্রাম আদালতে নারীর অভিগম্যতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নতুন বিষয়বস্তুগত এখতিয়ার যুক্ত করে বিরোধের পরিসর বৃদ্ধি করা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে