বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে মশার দাপটে অতিষ্ঠ নগরবাসী

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মশার দাপটে অতিষ্ঠ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। করোনার প্রকোপের মধ্যে মশাবাহিত ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহিত রোগ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নাগরিকরা। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মশার ওষুধ স্প্রে করার দাবি করা হলেও এর সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি করপোরেশন মশক নিধন খাতে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এতে নাগরিকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।

মালাই চা, শীতের পিঠা, কাবাব আর স্ট্রিট ফুডসহ নানা মুখরোচক খাবার খেতে নগরের আউটার স্টেডিয়ামের মুক্তমঞ্চ এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় জমজমাট আড্ডা জমে। নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এখানে এসে সময় কাটান। রাকিব হাসান নামের তাদের একজন জানান, এখানে এসে বসলেই মশার উৎপাত শুরু হয়। মশার কামড় আর ভনভন শব্দে খুব অস্বস্তি লাগে।

বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, সারাদিন মশার উৎপাত থাকলেও বিকাল, সন্ধ্যা ও ভোরে মশার অত্যাচারে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়ে। কয়েল বা স্প্রে করেও রেহাই পাচ্ছেন না তিনি।

গৃহিণী রাকিবা সুলতানা জানান, সারাদিন মশার অত্যাচার থাকলেও সন্ধ্যার তাদের দাপট বেড়ে যায়। মনে হয় উড়িয়ে নিয়ে যাবে। কয়েল বা স্প্রে দিয়েও কাজ হয় না। সিটি করপোরেশনের ওষুধ কোনো কাজে আসছে বলেও জানান তিনি।

তাছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কর্মসূচি জোরালো না হওয়ায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। বিষাক্ত মশার কয়েলের ধোঁয়া, ফ্লাইং ইনসেক্ট কিলার স্প্রে আর মশারির দিয়ে মশার উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে চেষ্টা করেন তাদের কেউ কেউ।

শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সুশান্ত বড়ুয়া জানান, মশার কয়েলের ধোঁয়া, স্প্রে এগুলো শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি সহ্য করতে না পারলে বড়দের জন্যও ক্ষতিকর। শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শীতকালে অনেক অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয় মশার কয়েল থেকেই। মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষা পেতে মশারিই সবচেয়ে নিরাপদ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম বলেন, চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের নির্দেশে মশকনিধন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। চসিকের পাশাপাশি নগরবাসীকেও এগিয়ে আসতে হবে। ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, নির্মাণাধীন ভবন, ডাবের খোসা, ফেলে রাখা টায়ারসহ কোথাও যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে। স্বচ্ছ পানিতে বংশ বিস্তার করছে এডিস মশা। বাসা বাড়ির ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখতে হবে। সম্ভব হলে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সেপটিক ট্যাংকে ২৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেল সাবধানে ঢেলে দিতে পারেন ভবন মালিকরা।

তিনি আরও বলেন, চসিক ৪১ ওয়ার্ডে নিয়মিত লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড ওষুধ হ্যান্ড স্প্রে মেশিন ও ফগার মেশিনের সাহায্যে দিচ্ছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি থেকে ১৫ হাজার লিটার কালো তেল কেনা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) ২০ ড্রাম ডেলিভারি নিয়েছি। দ্রম্নত এগুলো ছিটানো হবে। বদ্ধ পানিতে মশা ধ্বংসে এটি কার্যকর ওষুধ। প্রতিটি ওয়ার্ডকে চার ভাগ করে নিয়মিত মশার ওষুধ স্প্রে করছে প্রশিক্ষিত কর্মীরা। প্রতি ওয়ার্ডে ২টি করে ফগার মেশিন ও পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্প্রে মেশিন দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে