তাপস-খোকনের দুর্নীতি প্রমাণ হলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা : তাজুল

মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের অর্জন নাই সেটা ঠিক না। আমরা অনেক সমস্যাকে সংকুচিত করে এনেছি। রাস্তায় ট্রাফিক অনেক বেশি। রিকশা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এটা হচ্ছে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের একটা চিহ্ন।'

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের দুর্নীতির প্রমাণ পেলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, 'সাঈদ খোকন ও শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হতে পারে। কোথাও যদি দুর্নীতি হয় এবং তদন্তসাপেক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবেন তারা।' সময়ের ব্যবধানে খোকন ও তাপসের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে বলে মন্তব্য করে তাজুল বলেন, 'সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দুজন ভিন্ন মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই দুজনের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকতে পারে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়েছে, তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। আমরা আশা করি একটা সময়ের ব্যবধানে এটা সমাধান হয়ে যাবে।' অনুষ্ঠানে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে আগামী সপ্তাহে দুই সিটি করপোরেশনকে নিয়ে বৈঠকে বসা হবে বলে জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনপ্রতিনিধিরাই পারেন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করায় মেয়ররা নগরবাসীকে এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারবেন।' প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের অর্জন নাই সেটা ঠিক না। আমরা অনেক সমস্যাকে সংকুচিত করে এনেছি। রাস্তায় ট্রাফিক অনেক বেশি। রিকশা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এটা হচ্ছে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের একটা চিহ্ন। আমাদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ হবে।' তাজুল ইসলাম বলেন, 'আইইডিসিআর বলেছিল, এ বছর ডেঙ্গু বেশি হবে। আমাদের কী করা দরকার আমরা সে কাজটা করেছি। জনগণ অংশগ্রহণ করেছে। তারা তাদের আঙিনায় যেখানে মশা প্রজনন হয় তা ধ্বংস করার জন্য কাজ করেছে। এ বছর আমি যে প্রতিবেদন পেয়েছি, তাতে একজন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। এর আগে আরও তিনজন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। তাদের ডেঙ্গুর সঙ্গে অন্য রোগও ছিল। আমরা বলতে পারি, তুলনামূলকভাবে সফল।' মন্ত্রী বলেন, 'আজ পানি সরবরাহ নিশ্চিত হয়েছে। যা উৎপাদন হয়, তা চাহিদার চেয়ে বেশি। পাশাপাশি গুণগতমান অনেক ভালো।' স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি রাজধানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সে অনুযায়ী বর্জ্য থেকে বিদু্যৎ উৎপাদনের জন্য আমিনবাজারে ইন্সিনেরেশন পস্ন্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে এবং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 'এই পস্ন্যান্টে প্রতিদিন যে পরিমাণ বর্জ্য লাগবে তা সরবরাহ করলে যেখানে-সেখানে আর ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকবে না।' ভবিষ্যতে দেশের সব সিটি করপোরেশন এবং প্রতিটি জেলায় ইন্সিনেরেশন পস্ন্যান্ট স্থাপন করা হবে বলেও জানান তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, 'প্রতিদিন ঢাকা শহরে ২৬৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করি। বিশ্বের অন্য কোনো শহরে এতো বড় কার্যক্রম নেই। ভবিষ্যতে নাগরিক সেবা আরও বাড়ানো হবে।' অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইবরাহীম।