অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ কবুতর ব্যবসায়

প্রকাশ | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
খঁাচায় বন্দি এক জোড়া কবুতর -যাযাদি
কবুতর বেচাকেনায় সকাল থেকেই জমজমাট চারপাশ। হাজারও মানুষের ভিড়। কেউ কেনায় ব্যস্ত, কেউ বিক্রিতে। ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সব মিলিয়ে যেন ‘কবুতর হাটে’ রূপ নিয়েছে মিরপুর-১ নম্বরের একাংশ। সরেজমিন দেখা গেছে, মিরপুর এক নম্বরে বিভিন্ন প্রজাতির কবুতরের সমাহার। আর ক্রেতাদের ডাকছেন এসব প্রজাতির কবুতর নিয়ে বিক্রেতারা। তাদের মধ্যে কেউ শখের কবুতর হাটে তুলেছেন, কেউ ব্যবসা করেই চলেন। এলাকাটিতে ভোর থেকেই শুরু হয় কবুতর বেচাকেনা। বিকাল পযর্ন্ত চলে প্রায় প্রতিদিনই। ক্রেতাদের অনেকে বাসায় নানা ব্যবস্থায় কবুতর পুষেছেন। আবার অনেকের রয়েছে মিরপুর এলাকায় ছোট ছোট কবুতর খামার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কবুতর এখন শুধু শখ করে পোষা হয় না। ব্যবসায়ীক উদ্দেশেও পোষা হচ্ছে। আর দিন দিন বাড়ছে ব্যবসায়ীর সংখ্যাও। কেননা, অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হচ্ছে এ ব্যবসায়। আর এখন এটি লাভজনক ব্যবসাগুলোর মধ্যে একটি। যেমনটি লাভ করে চলছেন মিরপুরের বাবুল মিয়া। প্রায় পঁাচ বছর ধরে তিনি কবুতর ব্যবসায় জড়িত। এক হাট থেকে পছন্দমতো কিনে অন্য হাটে বিক্রি করছেন কবুতর। সুবিধার জন্য একটি দোকানও রয়েছে তার। সেখানেও বেচাকেনা থেমে নেই কবুতরের। মিরপুরের ওই দোকানটিতে বাবুল বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর তুলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল্যান্ডের জেকোবিন প্রজাতির এলমন কবুতর। যা এক জোড়া ছয় হাজার টাকা। এ জাতের কবুতর সব সময় মাথার লোম ও পাখনা ময়ূরের মতো ছড়িয়ে রাখে। লোম দিয়ে চোখও ঢেকে রাখতে পছন্দ করে এরা। এছাড়া প্রত্যেক কবুতরের রয়েছে রঙ আর জাতভেদে দামের পাথর্ক্য। এখানে পাওয়া যায় বুডারবল প্রজাতের এক জোড়া কবুতর চার হাজার টাকায়। সেইসঙ্গে সিরাজি কবুতরের চাহিদা ব্যাপক। এ প্রজাতির সিলভার রঙের এক জোড়ার দাম সাত হাজার টাকা। এছাড়া সিরাজি লাল জাতের কবুতর জোড়া প্রতি দাম ছয় হাজার, সিরাজি কালো চার হাজার ৫০০, সিরাজি হলুদ পঁাচ হাজার ৫০০ টাকা জোড়া বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে বাবুল বলেন, আমি পঁাচ বছর ধরে কবুতরের ব্যবসায় জড়িত। এক হাটে কবুতর কিনে অন্য হাটে বিক্রি করি। আমার কাছে সকল ধরনের কবুতর আছে। তবে এখন কবুতরের বাজার নিচের দিকে। শীত আসলে দাম বাড়বে। গরমে কবুতরের অনেক রোগ হয়, যেমন ডায়রিয়াই বেশি হয়। তবে স্যালাইন ও মাল্টিভিটামিন খাওয়ালে কবুতর সুস্থ থাকে। এছাড়া কবুতরের থাকার ঘর সবসময় পরিষ্কার রাখতে হয়। বনানী থেকে কবুতর কিনতে মিরপুর এসেছেন কবির আহম্মেদ। তার দুই জোড়া এলমন আছে। আরও তিন জোড়া এলমন কিনতে চান। এ বিষয়ে কবির বলেন, ‘কবুতর পোষার শখ ছোটবেলা থেকেই। কবুতরের জন্য আমার ফ্ল্যাটের ছাদ বরাদ্দ। এখন দামও কম। তাছাড়া অনেক বিদেশি জাতের কবুতর দেশেও হচ্ছে।’ কবুতরের খামারি এসএ আমিন জং বলেন, এক সময় এক জোড়া শটপিচ কবুতরের দাম ছিল ৩৫ হাজার টাকার উপরে। কিন্তু এখন চার হাজার টাকায় কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। দেশের মানুষ এখন এই জাতের কবুতর উৎপাদন করছে। দেশের কবুতর কখনও বিদেশে পাচার হয় না। যে কারণে কবুতরের দামও কম।