২০ বস্তা ছাই, আর কিছুই নেই

কড়াইল বস্তিতে আগুন

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপে থেকে ব্যবহারযোগ্য জিনিস খুঁজছেন বস্তিবাসীরা -যাযাদি
রাজধানীর কড়াইল বস্তির মসজিদ রোডের জি কে এন্টারপ্রাইজ নামে একটি হাডর্ওয়্যারের দোকান ও একটি গুদামের মালিক বিপ্রদেব দাস। রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর দিনের আলোর অপেক্ষা না করে খুঁজে চলেন তার মূল্যবান জিনিসপত্র। একে একে ২০টি বস্তা ছাই দিয়ে ভরেছেন। অনেক খেঁাজাখুঁজির পরও কোনো মালামাল অক্ষত অবস্থায় পাননি তিনি। ঘড়ির কঁাটায় তখন দুপুর ১২টা। কিছু না পেয়ে হতাশ বিপ্রদেব বসেছিলেন দোকানের ধ্বংসস্তূপের ওপর। তার মতো অনেকেই সবর্স্ব হারিয়েছেন শনিবারের আগুনে। এদিন রাত সাড়ে ১০টায় বস্তিতে আগুন লাগে। ফায়ার সাভিের্সর ৬টি ইউনিট, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক এবং বস্তিবাসীদের দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বিপ্রদেব দাস বলেন, ‘আমার হাডর্ওয়্যারের দোকানে স্ক্রু থেকে শুরু করে রিকশার বিয়ারিং, রং, পলিশ, সব ধরনের পাটর্স, মাল্টিপ্লাগ বিক্রি করি। নিচতলায় দোকান, দোতলায় গোডাউন। বস্তির সবচেয়ে বড় দোকানটিই আমার। আগুন মুহূতের্র মধ্যেই নিঃস্ব করে দিল আমাকে।’ তিনি বলেন, ‘দোকান আর গুদামে মোট ২০ লাখ টাকার মাল ছিল। আগুনে দোকান পুড়ে ছাই। দোকানের এক কোণের ছাই দিয়ে ২০টি বস্তা ভরলাম। সবমিলে এই ২০ বস্তা ছাই পেলাম, আর কিছুই নেই। মূল্যবান কিছুই পেলাম না।’ বস্তির যে বাড়িটি থেকে আগুনের সূত্রপাত তার মালিক নুরুল আমিন পেশায় একজন মুদি দোকানদার। ঘর থেকে ২০০ গজ দূরেই তার দোকান। আগুনের শব্দ শুনে তৎক্ষণাৎ ছুটে এলেন ঘরে। দেখলেন কিছুই নেই। তার ও তার ভাড়াটিয়ার টিভি, ফ্রিজ সবই পুড়ে ছাই। আগুনের বিষয়ে বস্তিবাসী জানায়, বৈদ্যুতিক শটর্সাকির্ট থেকেই নুরুল আমিনের ঘরে প্রথমে আগুন লাগে। এরপর পাশে থাকা একটি লেপ-তোষকের দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আগুনের তীব্রতা বাড়ে। এতে বস্তির অধর্শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫টি দোকান। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সাভির্স জানায়, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পেলে সঠিক কারণ ও ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। এদিকে প্রতিবারের মতো অগ্নিকাÐের সুযোগে এবারও বস্তির অধিকাংশ দোকানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বস্তির হোসেন ফামেির্সর মালিক আবুল হোসেন বলেন, ‘ওষুধের পাশাপাশি এই দোকানে বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোড করা হতো। রাতে আমার দোকান খোলা ছিল, আগুন লাগার সময় সবাই হইহুল্লোর করে দোকানে ঢুকে নগদ টাকা, বিকাশ করার হ্যান্ডসেট, ওষুধপত্রসহ মোট দুই লাখ টাকার মালামাল লুট করে।’ এফএম টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা মোবাইল সাভিির্সংয়ের দোকান। দোকানে আমার ৫-৬টা হ্যান্ডসেটসহ কাস্টমারদের সাভিির্সংয়ের মোট ১০টা হ্যান্ডসেট, কম্পিউটার ও নগদসহ মোট তিন লাখের মালামাল লুট হয়েছে।’