আইন না মানার প্রবণতায় সব চেষ্টা বিফলে যাচ্ছে সড়কে শৃঙ্খলা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রোববার রাজধানীর সোনারগঁাও হোটেল ক্রসিংয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিদশর্ন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজামান মিয়া -ফোকাস বাংলা
পুলিশের চেষ্টা ও আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি না থাকলেও জনসাধারণের ‘আইন না মানার প্রবণতায়’ সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানোর সব চেষ্টা ‘বিফলে যাচ্ছে’ বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজামান মিয়া। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহŸান জানিয়েছেন তিনি। রোববার রাজধানীর সোনারগঁাও হোটেল ক্রসিংয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিদশর্ন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পুলিশ কমিশনার। আছাদুজামান মিয়া বলেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ‘নিরলসভাবে’ কাজ করে যাচ্ছে। ‘পুলিশের প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও আইন না মানার প্রবণতায় সব চেষ্টা বিফলে যাচ্ছে।’ ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে গত ২৯ জুলাই বাসের চাপায় দুই শিক্ষাথীর্র মৃত্যুর পর সারাদেশে শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগী হয় সরকার। বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের পাশাপাশি আইন প্রয়োগে কড়াকড়ি আরোপ করে ট্রাফিক পুলিশ। পুলিশের কড়াকড়িতে মোটরবাইক চালকদের হেলমেট ব্যবহার বাড়লেও ঝুঁকিপূণর্ সড়ক পারাপার ও ফুটব্রিজ ব্যবহার না করার প্রবণতা আগের মতোই দেখা যচ্ছে প্রতিদিন। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘সড়কের বিশৃঙ্খলতা দূর করতে আন্দোলন করেছিল আমাদের কোমলমতি শিক্ষাথীর্রা। তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে আমরা প্রথমে ১০ দিনব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করেছিলাম। এখন সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে ট্রাফিক কমর্সূচি পালন করা হচ্ছে। এ কাজে সহযোগিতার জন্য রোভার স্কাউট, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট সদস্যদের ধন্যবাদ জানান আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি জানান, ট্রাফিক আইন অমান্য করায় গত এক মাসে প্রায় ৭ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অনেক গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে। মামলা ও জরিমানা করা শেষ কথা নয়। আমরা ট্রাফিক আইন মানার জন্য সচেতনতামূলক বিভিন্ন কমর্সূচি গ্রহণ করেছি। পুলিশের নিজস্ব উদ্যোগে ঢাকা শহরে ১৩০টি বাস স্টপেজে ‘বাস স্টপেজ শুরু’ ও ‘বাস স্টপেজ শেষ’ লেখা সাইনবোডর্ বসানো হয়েছে। এই এক মাসে পরিস্থিতি রাতারাতি বদলে না গেলেও আগের চেয়ে ‘কিছুটা শৃঙ্খলা’ ফিরে এসেছে এবং হেলমেট ব্যবহারসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে ‘সাফল্য এসেছে’ বলে দাবি করেন আছাদুজামান মিয়া। তিনি বলেন, শত বছরের অভ্যাস বা অনিয়ম এক মাসে পরিবতর্ন হবে এটা আশা করা যায় না। তবে আমরা আশাবাদী, সকলে সচেতন হয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। সবার মধ্যে আইন মানার মানসিকতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ‘কারও পক্ষে’ সম্ভব না বলেও মন্তব্য করেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম ঢাকা মহানগর পুলিশ করবে না বা কাউকে করতে দেবে না। অন্যায়কারী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সচেতনতামূলক কমর্সূচির অংশ হিসেবে সোনারগঁাও হোটেল ক্রসিংয়ে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে গণপরিবহনের যাত্রীদের মধ্যে ফুল ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।