২৫ হাজার রোহিঙ্গার জন্য প্রস্তুত ভাসান চর: মন্ত্রী

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া Ñযাযাদি
নোয়াখালীর ভাসান চরে ২৫ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করার মতো ব্যবস্থা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ঘূণির্ঝড় তিতলি মোকাবেলার প্রস্তুতি তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ তথ্য দেন। এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ভাসান চরে অবকাঠামো নিমার্ণসহ যে আশ্রয়ণ প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করছে, গত ৪ অক্টোবর তার উদ্বোধন করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু সময় স্বল্পতায় তিনি এখনো ভাসান চরে যাননি। এ নিয়ে এক প্রশ্নে মায়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেদিন সময় দেবেন সেদিন ভাসান চরের উদ্বোধন করা হবে, আমরা প্রস্তুত, সেখানে ২৫ হাজার পরিবারকে নেয়ার মতো সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ গত কয়েক দশক ধরে কক্সবাজারের শরণাথীর্ শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নেয়া চার লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নিয়ে সামাজিক নানা সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার কাছে মেঘনার মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসান চরে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে সরকার। এর মধ্যে আগস্টের শেষে মিয়ানমারের রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হলে আবারও রোহিঙ্গার ঢল নামে। এ দফায় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়ায় ভাসান চরকে দ্রæত বসবাসের উপযোগী করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এই প্রেক্ষাপটে গত বছরের শেষ দিকে একনেকে ২৩১২ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়। এর আওতায় মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের জন্য ১২০টি গুচ্ছ গ্রামে ১৪৪০টি ব্যারাক হাউস ও ১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র নিমাের্ণর কাজ শুরু হয়। হাতিয়া থানাধীন চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসান চরে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। পুরোপুরি সরকারি অথার্য়নের এ প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিধাির্রত আছে। সেখানে অল্প সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য অবকাঠামো নিমার্ণ করে দেয়ায় নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান ত্রাণমন্ত্রী। ভাসন চরে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ‘অস্থায়ীভাবে’ রাখা হবে জানিয়ে মায়া বলেন, ‘তারা মিয়ানমারের নাগরিক। ওই দেশের নাগরিক হিসেবে সম্মানের সাথে দেশে ফিরে যাবে, এটাই আমরা চাই।’ তিনি বলেন, ‘যখন রোহিঙ্গারা আসে তখন ছিল হাড্ডিসার, কাপড় ছিল না, চেহারা ছিল নাÑ বস্ত্র নাই, কিচ্ছু নাই। এখন যদি যান দেখেন কী অবস্থা, হৃষ্টপুষ্ট আছে।” ভাসান চরের পুরো প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে এ প্রকল্পের কমর্কতার্রা বলছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য থাকার ঘর করা হয়েছে, সাইক্লোন শেল্টার করা হয়েছে, মালামাল রাখার গোডাউন রয়েছে, বঁাধ নিমার্ণ এবং সমুদ্র থেকে মালামাল নামাতে জেটি করা হয়েছে। জনমানবহীন চরটি আগে মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০১৩ সালে এ চরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা ঘোষণা করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নৌযান ছাড়া সেখানে যাতায়াতের সুযোগ নেই। হাতিয়া থেকে যেতেও তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।