বছরে ২% হারে দারিদ্র্য কমানোর আশা মুহিতের

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আবুল মাল আবদুল মুহিত
বছরে দুই শতাংশ হারে দারিদ্র্য কমিয়ে আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেছেন অথর্মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রোববার পল্লী কমর্-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ কিশোর-কিশোরী সম্মেলন ২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পিকেএসএফ সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল কাদের বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অথর্মন্ত্রী মুহিত বলেন, ‘আমাদের বাষির্ক দারিদ্র্য দূরীকরণ হার এখনো দুই শতাংশের যথেষ্ট নিচে রয়েছে। এটাকে দুই শতাংশে যদি আমরা নিতে পারি, তাহলে হয়ত আগামী ১০ বছরে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীভ‚ত করতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে দারিদ্র্যসীমা অন্তত ১০ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসা। এ জন্য আমরা যে কাযর্ক্রম গ্রহণ করছি, সে অনুযায়ী যদি ৭-৮ বছর চালিয়ে যেতে পারি, তাহলে সেই লক্ষ্যে আমরা পেঁৗছে যেতে পারি।’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সাবির্ক দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অতি দারিদ্র্যের হার নেমেছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশে। অনুষ্ঠানে মুহিত মুক্তিযুদ্ধের সময় কঠিন পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ধংসযজ্ঞ এবং হত্যাযজ্ঞ মানুষকে কাজ করতে দিত না। আমাদের দেশ থেকে এক কোটি মানুষকে দেশ ছাড়তে হলো শুধু জীবন রক্ষাথের্। আর দেশের মধ্যে প্রায় দুই কোটি মানুষ সারাটি বছর পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। যাতে অত্যাচারের হাত থেকে নিজেকে বঁাচানো যায়, অথার্ৎ দেশের অধের্ক মানুষ তখন কাজ করেনি। আর বাকি অধের্ক কোনোভাবে জীবনযাপন যাতে করতে পারে, সে জন্য কিছু না কিছু উৎপাদন করল। কিছু না কিছু করল, যাতে জীবনপ্রবাহ অব্যাহত থাকে।’ তিনি বলেন, ‘ওই অবস্থায় আমরা যখন দেশটাকে স্বাধীন করলাম তখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্যমাত্রা হলো এ দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করা। তখন দেশের অন্তত ৭০ ভাগ মানুষ দরিদ্র, সম্ভবত এটা ৮০-৯০ ভাগও হতে পারে। তাদের উন্নয়নই হলো আমাদের দেশের উন্নয়নের মূলমন্ত্র। প্রথম দিনই সেটা উন্নয়নের মূলমন্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। আজও সেটা একই কাজ করছে। অথর্মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দারিদ্র্যকে অনেকভাবে হারিয়েছি। কিন্তু এখনো প্রায় তিন কোটি মানুষ দরিদ্র। এর মধ্যে আবার এক কোটি অত্যন্ত হতদরিদ্র। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ১৯৭১ সালে নিধাির্রত হয়েছিল সেটা এখনো আছে।’ তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য দূরীকরণ মানে এই নয় যে, দেশে কোনো গরিব লোক থাকবে না। কিছু দারিদ্র্য সবসময় থাকবে। ‘প্রতিবন্ধী যারা আছে, বিধবা বা অসহায় বৃদ্ধ যারা আছেন, তারা কোথায় যাবেন। তাদের রাষ্ট্রের দেখাশোনা করতে হবে এবং রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় যেকোনো দেশের ১০ থেকে ১৪ শতাংশ মানুষ অবস্থান করে। আমেরিকার মতো অত্যন্ত ধনী দেশেও ১৪ শতাংশ মানুষ গরিব। তবে মালয়েশিয়ায় পৃথিবীর সবচেয়ে কম, মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার মধ্যে রয়েছে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৭-১০ বছর আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সময়। এই সময়টাকে আমরা কীভাবে ব্যবহার করি, কীভাবে চলি এর ওপর নিভর্র করবে আমাদের সুন্দর স্বপ্নের বাস্তবায়ন, যেটা বঙ্গবন্ধু বহুদিন আগে দেখে গিয়েছিলেন।’ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দেশের অথৈর্নতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সুস্থ সংস্কৃতি ও ক্রীড়াচচার্য় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে উন্নয়নকে টেকসই করতে শিশু-কিশোরদের নিয়ে সংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কমর্সূচি পালন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই কমর্সূচির আওতায় দেশের প্রায় ১১ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক লাখ শিক্ষাথীের্দর মধ্যে থেকে সৃজনশীল ও জ্ঞানভিত্তিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৭১০ জনকে বাছাই করা হয়। বাছাই করা কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ কিশোর-কিশোরী সম্মেলন ২০১৮’ আয়োজন করা হয়েছে। নবম হতে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা প্রতিযোগিতা অংশ নেয়।