চালক-হেলপারের ইচ্ছাতেই চলছে যাত্রী ওঠানামা

সড়ক শৃঙ্খলা

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রাজধানীর একটি সড়কের মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে এভাবেই যাত্রী ওঠানামা করানো হয় Ñবাংলানিউজ
রাজধানীর মালিবাগের বাসিন্দা মো. আসাদ বেসরকারি চাকরিজীবী। মালিবাগ থেকে খিলক্ষেতে প্রতিদিন গণপরিবহনে করে যাতায়াত করেন। সোমবার সকালে বাসে উঠেছেন অফিসে যাবেন বলে। ঘড়ির দিয়ে তাকিয়ে বার বার বাসের ড্রাইভারকে তাগিদ দিচ্ছেন। বিরক্ত হয়ে তিনি বললেন, রাস্তা ফঁাকা থাকলে অফিস যেতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। কিন্তু সোমবার বাড্ডা পযর্ন্ত আসতেই ৪৫ মিনিটের বেশি সময় লেগেছে। কারণ হিসেবে বললেন, বাসচালক যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তুলে সময় নষ্ট করছে। এখন অফিস যেতে দেরি হয়ে যাবে। আসাদের মতো অনেকেই রাজধানীতে প্রতিদিন এমন পরিস্থিতিতে পড়ছেন। স্টপেজের তোয়াক্কা না করে চালক ও হেলপারের (চালকের সহকারী) ইচ্ছাতে যেখানে-সেখানে চলছে যাত্রী ওঠানামা। অন্যদিকে ট্রাফিক বিভাগ বলছে, প্রতিদিনের মামলার অধের্কই হচ্ছে নিদির্ষ্ট স্টপেজের বাইরে গাড়ি রাখায়। আগের চেয়ে এখন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। এ ব্যাপারে যাত্রীদেরও সচেতন হওয়া দরকার। রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় দেখা গেছে, মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরা অভিমুখে বাসস্টপেজ না থাকলেও চালক ও হেলপারদের অঘোষিত স্টপেজে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গাড়িকে সেখানে থেমে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অবশ্য, দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নিচ্ছেন। বেলা ১১টা পযর্ন্ত পঁাচটি মামলার তিনটি নিদির্ষ্ট বাসস্টপেজের বাইরে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানোতে করা হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে মৌচাক, মগবাজার, ওয়ারলেস ও মগবাজার মোড় এলাকায়। নিদির্ষ্ট বাসস্টপেজের বাইরে কেনো গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানো হয় এ বিষয়ে রাইদা পরিবহনের চালক ইমরান বলেন, আমরা নিদির্ষ্ট স্টপেজেই গাড়ি রাখতে চাই, কিন্তু সেখানে যাত্রী থাকে না। যাত্রীরা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দঁাড়িয়ে থাকে। আমাদেরও যাত্রী দরকার, তাই তাদের ওঠাতে হয়। গত ২৯ জুলাই কুমিের্টালায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষাথীর্ নিহত হয়। এই দুঘর্টনার পর ঢাকার রাজপথে নেমে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষাথীর্রা। আন্দোলনের পর থেকে কঠোর হয় ট্রাফিক বিভাগ। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আগের অবস্থায় ফিরে গেছে বাসচালক ও হেলপাররা। এ বিষয়ে সবুজবাগ জোনের দায়িত্বরত ট্রাফিক সাজের্ন্ট সরওয়ার বলেন, আমরা প্রতিটি চালকদের আগে সতকর্ করছি, নিদির্ষ্ট ট্রাফিক মানার জন্য উৎসাহিত করছি। এরপরও তারা সেটা না মানলে আমরা মামলা করছি। অনেক ক্ষেত্রে আমরা গাড়ি রেকার করি। মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানোর চিত্র দেখা গেছে নতুন বাজার, নদার্, কুড়িল এলাকায়ও। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাসে উঠছেন যাত্রীরা। সাইফ নামে এক শিক্ষাথীের্ক এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাসগুলো মামলার ভয়ে এখন রাস্তার সাইড দিয়ে আসে না। মাঝ রাস্তা দিয়ে যায়, যাত্রী পেলে তারা গতি কমিয়ে দেন তখন আমরা উঠি। বাড্ডা জোনের সাজের্ন্ট সৈয়দ বাহাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি যাতে গণপরিবহনে হ-য-ব-র-ল অবস্থা না হয়। এরপরও চালকরা নিদির্ষ্ট বাসস্টপেজ মানতে চায় না। তবে আমাদের অবস্থান কঠোর। শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা প্রতিদিনই গাড়ি রেকার করছি, মামলা দিয়ে যাচ্ছি। এটা অব্যাহত থাকবে।’