স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশেষ বরাদ্দের দাবি

প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবতের্নর কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বঁাচাও আন্দোলন (পবা)। সেই সঙ্গে জীবনযাত্রার ধরনের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পকর্ থাকায় বাজেট বরাদ্দে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার রাজধানীর কলাবাগানে পবা কাযার্লয়ে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে এই দাবি জানানো হয়। ‘অপ্রতিরোধ্য ক্যান্সার ও হৃদরোগ : পরিবেশ বিপযর্য় : করণীয়’ শীষর্ক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে পবা। সম্প্রতি ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ইন্সটিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্র অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের হিসাবে বলা হয়েছে, ২৫০টি রোগ ও বিভিন্ন ধরনের জখমে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আট লাখ ৪৭ হাজার ৮৯০ জনের মৃত্যু হয়। প্রতিবছর এই সংখ্যা বাড়ছে। যা ২০৪০ সালে বেড়ে ১১ লাখ ২৩ হাজার ৪৫০ জন হবে। অথার্ৎ মৃত্যু বাড়বে ৩২ শতাংশ। স্বাস্থ্য-বিষয়ক আন্তজাির্তক জানার্ল ল্যানচেটে বলা হয়, ২০১৩ সালে এক লাখ ৭৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় স্ট্রোকে, এক লাখ ছয় হাজার হাটর্ অ্যাটাকে এবং ২৮ হাজার ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে বলা হয়েছে, ১৯৯০-২০১৩ সাল পযর্ন্ত বিভিন্ন রোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। এ ছাড়া ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর প্রধান দুটি কারণের একটি হৃদরোগ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বতর্মানে যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয় এর ৬৭ শতাংশই মারা যান অসংক্রামক রোগে। ২০১০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৮.৭ শতাংশের মধ্যে অন্তত একটি অসংক্রামক রোগের (হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস) ঝুঁকি, ৭৭.৪ এর মধ্যে অন্তত দুটি ঝুঁকি এবং ২৮.৩ শতাংশের মধ্যে অন্তত তিনটি ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১২ লাখ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। প্রতিবছর দুই লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং দেড় লাখ মানুষ মারা যায়। জাপানের জানার্ল অব ক্লিনিক্যাল অনকোলজির তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে এক কোটি ২৭ লাখ মানুষের দেহে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি ঘটে চলেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যা নিওপ্লাসিয়া নামে পরিচিত। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকবে দুই কোটি ১৪ লাখ মানুষ। বক্তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আইন ও নীতিমালা পযাের্লাচনা-সংক্রান্ত এক প্রকাশনা অনুসারে নিরাপদ খাদ্য, পরিবেশ সংরক্ষণ, মাদক নিয়ন্ত্রণ, তামাক নিয়ন্ত্রণ, কায়িক পরিশ্রম নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রায় ৯টি নীতিমালা এবং ১৭টি আইন রয়েছে। কিন্তু এসব আইন প্রয়োগের যথেষ্ট গুরুত্ব না পাওয়ায় জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেয়া হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য বিভাগ গঠন, জনস্বাস্থ্য-বিষয়ক নীতি প্রণয়ন, এই নীতিকে সব আইন, নীতির ওপর প্রাধান্য দেয়া, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে মাঠ, পাকর্, হঁাটার সুব্যবস্থা এবং পথচারীদের চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বরাদ্দ প্রদান। পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী. মো. আবদুস সোবহান, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের (নাসফ) সহ-সাধারণ সম্পাদক অলিভা পারভিন, ডবিøওবিবি ট্রাস্টের সহ-প্রকল্প কমর্কতার্ আবু রায়হান প্রমুখ।