মুক্তচিন্তার উৎসব হয়ে উঠতে চায় লিট ফেস্ট

উৎসবের উদ্বোধন

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে ‘৮ম ঢাকা লিট ফেস্ট’। ঢাকা আন্তজাির্তক সাহিত্য উৎসবে বিভিন্ন স্টল ঘুরে পছন্দের বই খুঁজছেন বইপ্রেমীরা Ñসংগৃহিত
সাহিত্যের কোনো সীমা নেই, তা কালের গÐি পেরিয়ে আলোকিত করে বিশ্বকে। শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে মুক্তচিন্তাও চলে একই সমান্তরাল রেখায়। তাই শুধু সাহিত্য উৎসবে বন্দি না থেকে শিল্প আর মুক্তচিন্তার উৎসব হয়ে উঠতে চায় ঢাকা লিট ফেস্ট। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ঢাকা আন্তজাির্তক সাহিত্য উৎসবের (ঢাকা লিট ফেস্ট) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমনটাই বলছিলেন উৎসবের আয়োজকরা। তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট নন্দিতা দাস, পুলিৎজার বিজয়ী মাকির্ন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অ্যাডাম জনসন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজন সম্পকের্ আলোকপাত করে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা লিট ফেস্টের তিন পরিচালক সাদাফ সায্ সিদ্দিকী, আহসান আকবর ও কাজী আনিস আহমেদ। এ সময় লিট ফেস্টের পরিচালক, কথাসাহিত্যিক ও প্রকাশক কাজী আনিস আহমেদ বলেন, আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলা ও মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী। তাই এ সাহিত্য উৎসব সবসময়ই সেই ধারাকে উৎসাহিত করে। তাই শুধু সাহিত্যে বন্দি না থেকে আমরা সাহিত্যের পাশাপাশি শিল্প এবং মুক্তচিন্তার ধারাকেও এ উৎসব থেকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে কত্থক নৃত্যের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় উৎসবে আগত অতিথি এবং শিল্প-সাহিত্য অনুরাগীদের। এ সময় নজরুলের ‘ভোরের হাওয়া এলে’ গানের সঙ্গে কত্থক নৃত্য পরিবেশন করেন মুনমুন আহমেদ। লাল-নীল আলোর রোশনাই আর কত্থকের মুগ্ধতা ছড়িয়ে যায় পুরো মিলনায়তনে। মুনমুন আহমেদের পর নৃত্য পরিবেশন করেন কত্থক শিল্পী অপরাজিতা মুস্তফা। এরপরই ‘ও পাখি তারে বলে দিস’ গানের সঙ্গে কত্থকের বৈঠকী ঠুমরীর পরিবেশন নিয়ে আবারও হাজির হন মুনমুন আহমেদ। সবশেষে রেওয়াজ পারফমির্ং স্কুলের শিক্ষাথীর্রা তিনটি রাগ ও তিনটি তালের সমন্বয়ে পরিবেশন করেন ‘তারানা মল্লিকা’। নৃত্যের মুগ্ধতা ছড়িয়ে পরার পর ফিতা কেটে আয়োজনের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিমার্তা শেখ মুজিবুর রহমানও শিল্প-সাহিত্যে অনুরাগী ছিলেন। বতর্মান সরকারও শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়নে নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে আগত বিদেশি অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আপনারা বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন আমাদের এই সাহিত্য উৎসবে যোগ দিতে। এখানে আপনারা আমাদের যেমন আপনাদের সংস্কৃতির সম্পকের্ জানাবেন তেমনি আমাদের সংস্কৃতিকেও আপনারা বয়ে নিয়ে যাবেন নিজেদের ভেতর। এভাবেই আমাদের দেশ, সংস্কৃতি পৌঁছে যাবে বিশ্ব দরবারে। অনুষ্ঠানে কথা বলেন অভিনেত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট নন্দিতা দাস। তিনি বলেন, ‘আজকের এই সময়টা আমাদের সব ধরনের কাজে উৎসাহ প্রদানের একটি সময়। বাংলাদেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অজর্ন করেছে। এ দেশের শিল্প-সাহিত্যও বেশ সমৃদ্ধ। সেই ধারাকে অব্যাহত রাখতে আমাদের আরও বেশি মুক্তচিন্তার চচার্ চালিয়ে যেতে হবে।’ এবারের উৎসবে বিদেশি অতিথিদের মধ্যে অংশ নিচ্ছেন পুলিৎজার বিজয়ী মাকির্ন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অ্যাডাম জনসন, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক ও কলামনিস্ট মোহাম্মদ হানিফ, ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ফিলিপ হেনশের, বুকার বিজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক জেমস মিক, ভারতীয় জনপ্রিয় লেখিকা জয়শ্রী মিশ্রা, লন্ডন ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব রাইটিংয়ের পরিচালক ও কথাসাহিত্যিক রিচাডর্ বিয়াডর্, ভারতীয় লেখিকা হিমাঞ্জলী শংকর, শিশুতোষ লেখিকা মিতালি বোস পারকিন্স, ওয়ালস্ট্রিট জানার্ল এশিয়ার প্রধান হুগো রেস্টল, মাকির্ন সাংবাদিক প্যাট্রিক উইন, লেখক ও সাংবাদিক নিশিথ হাজারি। লিট ফেস্টের অষ্টম এ আয়োজন এবার মুখরিত হবে বিশ্বের ২৫ দেশের দুই শতাধিক সাহিত্যিক, বক্তা, পারফমার্র এবং চিন্তাবিদের অংশগ্রহণে। আয়োজনে আলোচনা, পারফরম্যান্স ও চলচ্চিত্র প্রদশর্নীসহ থাকবে আনপ্লাগড মিউজিক কনসাটর্। বাংলাদেশে সাহিত্য জগতে স্বনামধন্য ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ঘোষণা করা হবে লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে। একইদিনে চালু হবে কেম্ব্রিজ শটর্ স্টোরি প্রাইজ। সবর্সাধারণের জন্য উন্মুক্ত এ আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। বাংলা একাডেমির আয়োজনে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে যাত্রিক।