খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে: রিজভী

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী Ñযাযাদি
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু হয়নি, কেবল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, সেই মুহূতের্ তাকে কারাগারে প্রেরণ করার উদ্যোগ শুধু মনুষ্যত্বহীন কাজই নয়, এটি সরকারের ভয়ংকর চক্রান্ত। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোডের্র সদস্য সৈয়দ আতিকুল হকের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন। চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেননি এবং মেডিকেল বোডের্র চেয়ারম্যান চিকিৎসক জলিলুর রহমান বতর্মানে দেশের বাইরে আছেন। এ অবস্থায় সরকারের নিদেের্শ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিতে বাধ্য করতে চাপ সৃষ্টি করছে। বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ খালেদা জিয়ার জীবনকে বিপন্ন করার অথবা শারীরিকভাবে চিরতরে পঙ্গু করার চক্রান্ত মাত্র। খালেদা জিয়া সুস্থ হোন, এটি ‘বিদ্বেষপ্রবণ’ সরকার কখনো চায় না। তিনি অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে লাগামছাড়া ক্রোধে এই ‘অবৈধ’ শাসকগোষ্ঠী এখন তার জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এটি শেখ হাসিনার ‘হিংস্র’ আচরণেরই চরম বহিঃপ্রকাশ। রিজভী বলেন, অহংকার, উন্মত্ততা, হিংসা ও দখলকৃত ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নিলর্জ্জ লড়াই চালাতেই বিচারবুদ্ধি হারিয়ে সরকার খালেদা জিয়ার জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকারের সৌজন্যবোধ ও হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে বলেই দেশের বিপুল জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ওপর চালানো হচ্ছে অমানবিক নিপীড়ন। সরকারের পাতানো পথে বিরোধী দলকে নিবার্চন করতে বাধ্য করানোর জন্যই সরকার খালেদা জিয়াকে নিয়ে নিষ্ঠুর প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে। তার চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারকেও কেড়ে নিয়েছে। চিকিৎসা শেষ না করেই হাসপাতাল থেকে কারাগারে প্রেরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভতির্ রাখার আহŸান জানিয়ে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষ না হওয়া পযর্ন্ত বিএসএমএমইউতে ভতির্ রাখতে হবে, না হলে জনগণ আর বসে থাকবে না, খালেদা জিয়াকে বিপযর্স্ত করার যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে এবার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে হলেও প্রতিরোধ করবে। নেতা-কমীের্দর বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে সংলাপের সময় কথা দিয়েছিলেন, নতুন মামলা দেয়া হবে না, গ্রেপ্তার করা হবে না এবং প্রকৃত রাজবন্দিদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে কোনো বিশ্বাস মেলেনি। গতকাল সংলাপে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমিও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, সমাবেশকে কেন্দ্র করে তিন দিন ধরে বিএনপির নেতা-কমীের্দর চিরুনি অভিযান চালিয়ে ছেঁকে ধরা হয়েছে, তার জন্য। জেলা-মহানগরের সভাপতি থেকে শুরু করে সাবেক সাংসদ, কেউই সরকারের গ্রেপ্তার অভিযান থেকে রেহাই পাননি। এমনকি সমাবেশে আসা ও যাওয়ার পথে হাজারের অধিক নেতা-কমীর্ ও সাধারণ সমথর্কদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ রিজভী অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তার করার পর প্রথমে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হবেÑ এই কথা বলে দর কষাকষি করা হয়েছে। অনেক নেতাকমীর্র কাছ থেকে টাকা নিয়েও ছাড়া হয়নি। এমনকি ৩০০ থেকে ৩৫০ জনের বড় বড় গ্রæপ করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তল্লাশি ও পুলিশি হানাতে হাজার হাজার নেতাকমীর্ ঘরবাড়ি ও এলাকাছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। বিএনপির এ নেতা প্রশ্ন করেন, সংলাপ কি তাহলে চূড়ান্ত আক্রমণের পূবের্ কিছুটা সময়ক্ষেপণ? তা না হলে বিরোধী দলের নেতাকমীের্দর গ্রেপ্তার না করার অঙ্গীকার করার পরও এত তাÐব, এত পাইকারি গ্রেপ্তার, সরকার কি তাহলে প্রতারণার ফঁাদ তৈরি করেছে? প্রধানমন্ত্রী অতীতের মতো বলেন একটা, কিন্তু করেন অন্যটা।