মেলা উদ্বোধন করে মুহিত

দেশে করদাতা বেড়েছে বাড়াতে হবে আরও

একসময় দেশে মাত্র সাত লাখ করদাতার কাছ থেকে আয়কর আদায় করা যেত। সেই সংখ্যা এখন বেড়ে ৩০ লাখের বেশি হয়েছে। এখন বিভিন্নভাবে প্রায় এক কোটি মানুষ কর দেয়।

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রাজধানীর রমনায় অফিসাসর্ ক্লাবে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে আয়কর মেলা। ছবিতে আয়কর দাতাদের ভিড় Ñযাযাদি
জনগণকে কর দিতে উৎসাহিত করতে জাতীয় রাজস্ব বোডের্র আয়োজনে সারাদেশের বিভিন্ন কর অঞ্চলে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রমনায় অফিসাসর্ ক্লাব আঙ্গিনায় এ মেলার উদ্বোধন করে অথর্মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘একসময় কর দিতে মানুষের অনীহা ছিল। কিন্তু এখন অসংখ্য যুবক এসে মেলায় কর দিয়ে যাচ্ছে।’ বতর্মানে সারাদেশে ৩৫ লাখ মানুষের আয়কর শনাক্তকারী নম্বর (টিআইএন) রয়েছে। তাদের মধ্যে আয়কর রিটানর্ দাখিল করেন ২০ লাখ। আগামী দুই বছরে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৫ লাখ করার পাশাপাশি ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করেছে এনবিআর। অথর্মন্ত্রী বলেন, একসময় দেশে মাত্র সাত লাখ করদাতার কাছ থেকে আয়কর আদায় করা যেত। সেই সংখ্যা এখন বেড়ে ৩০ লাখের বেশি হয়েছে। এখন বিভিন্নভাবে প্রায় এক কোটি মানুষ কর দেয়। অনেক ধরনের কর আছে, সবগুলো ধরলে এক কোটি মানুষ আজকে কর দেয়। এটা যথেষ্ট কৃতিত্বের বিষয়। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে এক কোটি করদাতা। তবে আমাদের উন্নয়ন যেভাবে ধাবিত হচ্ছে, তাতে এক কোটি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। এই এক কোটির সঙ্গে আরও কয়েক কোটি এখানে যুক্ত হওয়া উচিত। মুহিত দাবি করেন, ‘বতর্মান সরকারের সময়ে বিভিন্ন সেবা বেড়েছে, মানুষের জীবন মানের উন্নতি হচ্ছে বলেই জনগণ কর দিচ্ছে। এখন বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় আপনি ইচ্ছা করলে গাড়ি চালিয়ে চলে যেতে পারেন। এই সুযোগ ৩০ বছর আগেও ছিল না। এর ফলে অথর্নীতির গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং মানুষের মধ্যে বৈষম্য অনেক কমে যাচ্ছে। হ্যঁা বৈষম্য এখনো আছে, কিন্তু সেটা ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে। অথর্মন্ত্রী বলেন, ‘একসময় দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০ শতাংশ। তা এখন ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। অথার্ৎ সকলের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ২২ শতাংশও কম নয়। ২২ শতাংশ মানে প্রায় ৩ কোটি মানুষ। এই তিন কোটি মানুষকে এখন উপরে ওঠাতে হবে। সেটাই এখন আমাদের জাতীয় লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’ অনুষ্ঠানের সভাপতি জাতীয় রাজস্ব রোডের্র (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়া বলেন, দেশে আয়কর দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে, কিন্তু তা এখনও জিডিপির ১০ শতাংশের কম। অথচ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এই হার ১৫ শতাংশ। চলতি অথর্বছরে সাধারণ করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা গতবারের মতই আছে। যাদের বাষির্ক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার কম, তাদের কোনো কর দিতে হবে না। কোনো ব্যক্তি-করদাতার প্রতিবন্ধী সন্তান বা পোষ্য থাকলে প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য তার করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা করে বাড়বে। অথার্ৎ কোনো করদাতার একজন প্রতিবন্ধী সন্তান বা পোষ্য থাকলে তার করমুক্ত আয়সীমা হবে তিন লাখ টাকা। আয়কর ও মুনাফার উপর কর বাবদ চলতি অথর্বছরে ১ লাখ ৭১৯ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে এনবিআরকে। বিদায়ী সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৭৭ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। এনবিআর কমর্কতার্রা জানান, ঢাকাসহ সাত বিভাগীয় শহরে আয়কর মেলা চলবে ১৯ নভেম্বর পযর্ন্ত। এছাড়া সব জেলা শহরে চার দিন এবং ৩২টি উপজেলায় দুই দিন মেলা হবে। পাশাপাশি উপজেলা পযাের্য় ৭২টি ‘গ্রোথ সেন্টারে’ এক দিন ভ্রাম্যমাণ মেলা হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পযর্ন্ত মেলায় করদাতা, সম্ভাব্য করদাতা ও ভবিষ্যতের করদাতাদের জন্য ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি রিটানর্ গ্রহণ, কর পরিশোধ এবং কর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।