ক্যানসারের রেডিওথেরাপি সেবার উদ্বোধন চমেকে

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রেডিওথেরাপি সেবা কাযর্ক্রম উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন Ñযাযাদি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসায় অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি (কোবাল্ট-৬০) সেবা কাযর্ক্রম চালু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের একটি কক্ষে এটির উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমদ, চমেকের উপাধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার, চট্টগ্রামের বিএমএ সভাপতি ডা. মো. মুজিবুল হক, সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, রেডিওথেরাপি সাজর্ন আলী আজগর প্রমুখ। আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নোয়াখালী থেকে টেকনাফ পযর্ন্ত বৃহত্তর এ চট্টগ্রামের মানুষজন কম খরচে ক্যানসারের চিকিৎসাসেবা পাবেন। লাখো ক্যানসার রোগীর জন্য কোবাল্ট-৬০ মেশিনটি আশীবার্দস্বরূপ। এখন থেকে ক্যানসারের কোনো রোগীকে বিদেশ কিংবা চট্টগ্রামের বাইরে যেতে হবে না। মেয়র এ সময় আরও কম খরচে কীভাবে চিকিৎসাসেবা দেয়া যায়, সেই বিষয়টি হাসপাতাল কতৃর্পক্ষকে বিবেচনা করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের সব কয়টি টয়লেটের অবস্থা খারাপ। ফলে রোগীদের রোগ আরও বেড়ে যাচ্ছে। আমি সব কয়টি টয়লেট সংস্কার করে দেব।’ মোহসেন উদ্দিন আহমদ বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। চট্টগ্রামে এ রোগের ভালো কোনো চিকিৎসা না থাকায় রোগীদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। অনেকেই টাকার অভাবে যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতো। এই মেশিনটি চালু হওয়ার ফলে অনেক কম খরচে চিকিৎসাসেবা দেয়া যাবে। সেই সঙ্গে রোগীদের ভোগান্তিও কমবে। রেডিওথেরাপি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ক্যানসার রোগীদের অবস্থা ভেদে একজন রোগীর প্যাকেজে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পযর্ন্ত খরচ পড়বে। তবে রেডিওথেরাপি দিতে একজন রোগীর খরচ পড়বে মাত্র ৯০ টাকা। প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ জন ক্যানসার রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। আর একটানা প্রায় ১৫ বছর এই মেশিনের মাধ্যমে ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা যাবে। চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগে প্রায় তিন বছর ধরেই ক্যানসার চিকিৎসায় গুরুত্বপূণর্ রেডিওথেরাপি মেশিনটি নষ্ট ছিল। পরে দীঘর্ জটিলতা শেষে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যে নতুন রেডিওথেরাপি মেশিন আমদানি করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর পরমাণু শক্তি কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল মেশিনটির সোসর্ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। গত ৪ নভেম্বর সোসর্ থেকে রেডিয়েশন নিগর্মন সংক্রান্ত ‘বিপদমুক্ত’ বলে সনদ দেয়। এরপরই মেশিনটি চালুর সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। এ ছাড়া ক্যানসার চিকিৎসায় ২০০২ সালে কোবাল্ট নামের রেডিওথেরাপি মেশিন চালু হয়। এর কাযর্কারিতা ছিল ১০ বছর। ২০১২ সালে মেশিনটির মেয়াদ শেষ হলেও রোগীর সেবা কাযর্ক্রম অব্যাহত ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের শেষ দিকে এটি সম্পূণর্ অকাযর্কর হয়ে যায়। এরপর গত বছরের নভেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে রেডিওথেরাপি মেশিনটি। সেখান থেকে হাসপাতালে আসে গত ৩০ জানুয়ারি। ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে হাসপাতালের নষ্ট রেডিওথেরাপি মেশিনটি অকাযর্কর ঘোষণা করে। আর ৫ জুন থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক মেশিনটি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করে।