মেঝেতে বসেই রিটানর্ ফরম পূরণ

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনে বুধবার রাজধানীর অফিসাসর্ ক্লাবে করদাতা ও সেবা প্রাথীের্দর উপচেপড়া ভিড় Ñযাযাদি
আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনে বুধবার রাজধানীর অফিসাসর্ ক্লাবে করদাতা ও সেবা প্রাথীের্দর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। এ সময় অনেক করদাতাকে মেঝেতে বসেও রিটানর্ ফরম পূরণ করতে দেখা গেছে। মেলায় আগত করদাতাদের উল্লেখযোগ্য অংশই আয়কর রিটানর্ জমা দিচ্ছেন। এছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নেয়ার মাধ্যমে নতুন করে আয়করের খাতায়ও নাম লিখাচ্ছেন অনেকে। বুধবার ঢাকা অফিসাসর্ ক্লাব সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে চোখে পড়ে নারী-পুরুষ উভয়েই মেঝেতে বসে রিটানর্ ফরম পূরণ করছেন। এদের একজনের নাম প্রিন্স মাহমুদ। তিনি একটি বহুজাতিক কোম্পনিতে চাকরি করেন। তিনি বলেন, এর আগে অফিসের লোকের মাধ্যমেই রিটানর্ জমা দিতাম। এবারই প্রথম নিজের ফরম নিজেই জমা দিতে এসেছি। এখানে এসে হেল্পডেস্ক থেকে শুনে নিয়েছি কি কি করতে হবে? সে অনুযায়ী রিটানর্ ফরম পূরণের জন্য কোনো জায়গা না পেয়ে মেঝেতে বসেই করছি। তাসলিমা আকতার নামের অন্য একজনকেও মেঝেতে বসে রিটানর্ ফরম পূরণ করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, মেঝেতে বসে হলেও কাজটা শেষ করে ফেলা ভালো। এক বছরের মতো আর টেনশন থাকল না। কর দেয়ার জন্য মেলায় এক ছাদের নিচে সব সুবিধা পাওয়া যায়। ফরম পূরণে ভুল হচ্ছে কিনা সন্দেহ হলেই সেটা হেল্পডেস্ক থেকে দেখিয়ে নেয়া যায়। তাই মেলাতেই রিটানর্ দাখিল করতে এসেছি। তা ছাড়া কাপের্ট বিছানো থাকায় মেঝেতে বসে ফরম পূরণে তাদের কোনো অভিযোগও নেই। মেলায় দেখা যায় বেশ কিছু আইনজীবী করদাতাদের বিভিন্ন পরামশর্ দিচ্ছেন। মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন মিনু এমনই একজন কর আইনজীবী। তিনি বলেন, ব্যক্তি শ্রেণির বা কোম্পানি, যারা কর দিতে আসছেন তাদের আমরাসহ এনবিআরের হেল্প বুথ থেকে সাহয়তা করা হচ্ছে। কীভাবে রিটানর্গুলো সুন্দরভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে, কোথাও রেয়াত পাওয়া যাবে কিনা এসবসহ সামগ্রিক বিষয়ে করদাতাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা-২০১৮ মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অজর্ন’ ¯েøাগানে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হওয়া এই নবম আয়কর মেলার প্রতিপাদ্য ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’। কেন্দ্রীয়ভাবে এবার মেলা বসেছে রাজধানীর অফিসাসর্ ক্লাবে। গত দুই বছর ধরে আগারগঁাওয়ে নিমার্ণাধীন রাজস্ব ভবনে মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার তা ফিরে এসেছে পুরনো প্রাঙ্গণে। ঢাকার পাশাপাশি এদিন সারাদেশে শুরু হয়েছে এই মেলা। মেলার আয়োজক জাতীয় রাজস্ব বোডর্ (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পযর্ন্ত মেলা চলবে। মেলা শেষ হবে আগামী ১৯ নভেম্বর। গত ৮ বছরে আয়কর মেলা পেয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ, বেড়েছে জনপ্রিয়তা। মেলায় সেবাগ্রহীতার সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। ২০১০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে আয়কর মেলায় সেবাগ্রহীতা ও রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে ১৯ গুণ। একই সময়ে মেলা থেকে নিবন্ধন নেয়া নতুন করদাতার সংখ্যা বেড়েছে ৫ গুণ ও রিটানর্ জমা দেয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৬ গুণ। এনবিআরের তথ্যমতে, ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে ৭ দিন, জেলা শহরে ৪ দিন, ৩২ উপজেলায় দু’দিনব্যাপী এবং ৭০টি উপজেলায় একদিন ভ্রাম্যমাণ আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন ও আলোকসজ্জায় সেজেছে মেলাগুলো। এছাড়া আয়কর মেলা সম্পকের্ জনসচেতনতা বাড়াতে মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে করবিষয়ক এসএমএসও পাঠানো হয়েছে। টিভি ও টকশোতেও থাকবে মেলা সম্পকের্ আলোচনা। সচেতনতা বাড়াতে তৈরি করা হয়েছে আয়কর ডকুমেন্টারি ও ডকু ড্রামা, যা প্রচার করা হবে বিভিন্ন টেলিভিশন ও মেলায়।