স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা

থাটির্ফাস্টর্ নাইটে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আসাদুজ্জামান খান কামাল
নিবার্চনের কারণে এবার উন্মুক্ত স্থানের পাশাপাশি বাসা-বাড়ির ছাদেও থাটির্ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। থাটির্ফাস্ট ও বড়দিন উপলক্ষে আয়োজিত সাবির্ক নিরাপত্তা নিয়ে রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভা শেষে মন্ত্রী এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানান। একইসঙ্গে থাটির্ফাস্ট নাইটে কোনো আতশবাজি, পটকা ফোটানো, বেলুন, ফানুস ওড়ানো যাবে না। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের তফসিল ঘোষণার প্রেক্ষাপটে এবার নিয়ন্ত্রিতভাবেই ইংরেজি বছরের শেষ দিনটি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা এলো সরকারের পক্ষ থেকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে তুলে ধরেছেন, এবারের প্রেক্ষাপটটা অন্যরকম। জাতীয় নিবার্চন ৩০ তারিখে হতে যাচ্ছে। সেজন্য বিশেষভাবে নিরাপত্তার কথা চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘থাটির্ফাস্ট নাইটের জন্য আমরা কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। থাটির্ফাস্ট নাইট আমরা প্রথমত নিরুৎসাহিত করব ওইদিন করার জন্য। কারণ আপনারা জানেন, ৩০ তারিখ আমাদের সাধারণ নিবার্চন, সেটা লক্ষ্য রেখেই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সবাই সেদিন ইলেকশনের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। কাজেই আমরা নিরুৎসাহিত করছি, কোনো ধরনের খোলা জায়গায় যেন থাটির্ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান না হয়। বিশেষ করে কোনো উন্মুক্ত স্থানে এসব অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং বাসার ছাদেও করা যাবে না এসব অনুষ্ঠান।’ ফাইভ স্টার ও আন্তজাির্তক মানের হোটেল ছাড়া সব ধরনের বার বন্ধ থাকবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর বিকাল থেকে পরের দিন ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা পযর্ন্ত ক্লাবে কোনো বার খোলা থাকবে না। থাটির্ফাস্ট নাইটে কোনো বৈধ অস্ত্র বহন করা যাবে না। ওড়ানো যাবে না কোনো বেলুন, ফানুস, ফোটানো যাবে না আতশবাজি, পটকা।’ ডিজে পাটির্র ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান খঁান কামাল। তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর থাটির্ফাস্ট নাইটে কোনো হোটেল-গ্যাদারিং সৃষ্টি করে ডিজে পাটির্ করা যাবে না। হোটেলগুলোয় এবং বিভিন্ন জায়গায় ডিজে পাটির্ করে একটি বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়; যেহেতু ইলেকশন, সেহেতু আমরা বলছি কোনো হোটেলে ডিজে পাটির্ করা যাবে না এবং কোনো গ্যাদারিং সৃষ্টি করা যাবে না। থাটির্ফাস্ট নাইটে হোটেলগুলোয় বৈধ পাকির্ংয়ের বাইরে কোনো জায়গায় পাকর্ করতে পারবে না। সেটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। দেশের পযর্টন এলাকার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও থাকবে। ইংরেজি বছরের শেষ দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিয়ন্ত্রিত থাকবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৩১ ডিসেম্বর দিন ও রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না, যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হবে। খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় ধমীর্য় উৎসব বড়দিনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশে চাচর্গুলোয় নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব বাহুবন্ধনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায় যেখানে বড়দিনের অনুষ্ঠান করবে সেখানে তাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেবে। তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সহযোগিতা করবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার চাচর্ রয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে ৭৫টি। এরমধ্যে বড় চারটি তেজগঁাও, রমনা, মিরপুর ও বনানীতে। প্রতিটি চাচের্র দৃশ্যমান নিরাপত্তার পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বলয় নিয়ে আসা হবে। প্রতি চাচের্ সিসি টিভি লাগানো হবে। বড়দিন উপলক্ষে সারাদেশেই সব চাচর্ ও গুরুত্বপূণর্ স্থাপনায় নিরাপত্তা থাকবে। থাটির্ফাস্ট নাইটের মতো বড়দিনেও কোনো ধরনের আতশবাজি ও পটকা ফোটানো যাবে না বলে জানান মন্ত্রী। আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নিবার্চন কমিশনের পুরোপুরি এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে আমাদের করণীয় কিছু নেই। ইলেকশন কমিশন যেভাবে মনে করে সেই ব্যবস্থা করবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সহযোগিতা করার জন্য তৈরি আছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ৬০ লাখ লোক আনসারের ট্রেনিংপ্রাপ্ত আছে। কিন্তু নিবার্চনের কারণে সব প্রয়োজন হবে না। আমাদের ৫ লাখ ফোসর্ তৈরি রয়েছে এবং পযার্য়ক্রমে তারা ট্রেনিং দিয়ে যা যা প্রয়োজন তৈরি করছে। পাশাপাশি কোস্টগাডর্, বিজিবি, পুলিশ- সবাই তৈরি আছে। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সাভির্স ও কোস্টগাডের্র শীষর্ কমর্কতার্রা উপস্থিত ছিলেন।