সফল চিকিৎসায় পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
পায়ুপথের সব রোগকেই সাধারণ মানুষ পাইলস বলে জানেন। তবে পায়ুপথের সব রোগই পাইলস নয়। কোনোটা ফিশার, কোনোটা ফিস্টুলা, কোনোটা পাইলস, ফেঁাড়া, প্রোলাপস, রক্ত জমাট, পলিপ বা টিউমার। সবগুলোর সঙ্গেই কোষ্ঠকাঠিন্য কমবেশি সবচেয়ে বড় কারণ। ‘বিশ্ব পাইলস দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এমনটাই জানালেন ব্রিটিশ আমর্ড ফোসের্স (অব.) কনের্ল এবং দ্য রয়েল লন্ডন হসপিটালের কনসালট্যান্ট কলোরেক্টাল সাজর্ন ডা. রাকিবুল আনোয়ার। দিবসটি উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে পাইলস চিকিৎসার সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীষর্ক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজধানীর আর এ হাসপাতাল। আলোচক বলেন, মলদ্বার দিয়ে রক্ত এলেই রোগী যেন মনে না করেন যে তার পাইলস হয়েছে। একজন কোলোরেক্টাল সাজর্ন দিয়ে পরীক্ষা করেই তার নিশ্চিত হওয়া উচিত। আমরা পাইলসকে চারটি ভাগে ভাগ করি। পযার্য়- এক, দুই, তিন ও চার। এগুলো লক্ষণের ভিত্তিতে ভাগ করে থাকি। এক. পাইলসে শুধু রক্ত যাবে। এখানে সাধারণত ব্যথা হয় না। পায়খানার পরপর টাটকা রক্ত যায়। দুই. পাইলসে টাটকা রক্ত যাবে এবং রক্তগুচ্ছ বা পাইলসটা গোটার মতো বের হয়ে আসবে। মলত্যাগের পর এটা চলে যাবে। তৃতীয় পযাের্য় এ রক্তগুচ্ছ বাইরে বের হবে এবং হাত দিয়ে সেটা ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হবে। চতুথর্ পযাের্য় এটি কখনোই ঢোকানো যাবে না। বাইরে একটি টিউমার বা মাংসপিÐ জাতীয় জিনিস সবসময় বের হয়ে থাকবে। সেটা তার মলত্যাগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ব্যথা হবে, এমনকি গ্যাংগ্রিন বা অন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। চিকিৎসা নিয়ে তিনি বলেন, পাইলসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তাই প্রাথমিক অবস্থায় পাইলসের জন্য চিকিৎসকের পরামশর্ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিনা অপারেশনের মাধ্যমে ব্যথামুক্তভাবে পাইলসের চিকিৎসা করা সম্ভব। যেমন- বেন্ডিং, ইনজেকশন (স্কেলেরথেরাপি), ইনফ্রারেড কোয়াগুলেশন ইত্যাদি। এসময় তিনি জোর দেন কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে সাবধানতা অবলম্বনের জন্যেওবলেন, কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। এজন্য বেশি বেশি শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে। দৈনিক অন্তত ৮ গøাস পানি পান করতে হবে। মাংস (খাসি, গরু) কম খেতে হবে। ইসবগুলের ভ‚ষি রাতে ভিজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে। এরপরও কোষ্ঠবদ্ধতা থাকলে ওষুধের মাধ্যমে মল নরম রাখতে হবে। কেননা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পায়ুপথের রক্তনালি ফেটে রক্তজমাট বঁাধতে পারে। কখনো কখনো প্রচÐ ব্যথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অপারেশনও লাগতে পারে। তিনি বলেন, পাইলস অতি সাধারণ রোগ। অনেকের ধারণা, পাইলস ভালো হয় না এবং এটির কোনো চিকিৎসা নেই। এমন ধারণা ঠিক নয়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে পাইলসের সফল চিকিৎসা সম্ভব এবং পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।