শিশু রাইফার মৃত্যু

ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলা প্রমাণিত

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিইউজের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস Ñযাযাদি
নগরের মেহেদিবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডে আড়াই বছরের শিশু রাইফা খানের মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিভিল সাজের্নর নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, ‘শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফা যখন তীব্র খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং ওই সময় থাকা সংশ্লিষ্ট নাসের্দর আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও এ রকম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই ছিল না। শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফাকে অসুস্থতার জন্য ম্যাক্স হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভতির্ হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পযর্ন্ত চিকিৎসা পাওয়া পযর্ন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রে তার অভিভাবকের ভোগান্তি চরমে ছিল। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। তদন্তে স্পষ্ট হয় যে, হাসপাতালে রোগী ভতির্ প্রক্রিয়ায় ভোগান্তি প্রকট। চিকিৎসক নাসের্দর সেবা প্রদানের সমন্বয়হীনতা ও চিকিৎসাকালীন মনিটরিংয়ের অভাব দেখা যায়। অদক্ষ নাসর্ ও অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের ফলে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অনেক দুবর্ল রয়েছে, বিশেষত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবায় বিশেষজ্ঞের সাবর্ক্ষণিক উপস্থিতির সংকটটি প্রবল।’ তদন্ত কমিটিতে ছিলেন চট্টগ্রামের সিভিল সাজর্ন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ। চারটি সুপারিশ : ‘চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। ম্যাক্স হাসপাতালের সাবির্ক ত্রæটিপূণর্ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অতিদ্রæত সংশোধন করা অপরিহাযর্। কতর্ব্যরত নাসর্গণ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিপ্লোমাধারী থাকার নিয়ম থাকলেও ওই হাসপাতালে তা নেই। ডিপ্লোমা নাসর্ দ্বারা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাবর্ক্ষণিক দ্রæত ও আন্তরিক সেবা সুনিশ্চিত করতে হবে এবং রোগীর অভিভাবককে যথাসময়ে রোগীর অবস্থা ও চিকিৎসর ব্যাপারে সবের্শষ পরিস্থিতি অবগত করতে হবে।’ সিভিল সাজর্ন বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামলের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। পরে শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরের প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিইউজের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস। সিইউজে সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামলের সঞ্চালনায় এ সময় বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, সিইউজের সাবেক সভাপতি এজাজ ইউসুফী, মোস্তাক আহমদ, রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মনজুর কাদের মনজু, সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবতীর্, সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, সিনিয়র সাংবাদিক অরুণ দাশ গুপ্ত, নজরুল ইসলাম, ম. শামসুল ইসলাম, মহসিন কাজী, উজ্জ্বল ধর, উত্তম সেনগুপ্ত, মাসুদুল হক প্রমুখ।