সংবাদ সম্মেলনে দাবি

‘নীলনকশা’ হচ্ছে লন্ডন থেকে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, লন্ডন থেকে নিবার্চন বানচালের ‘নীলনকশা’ করছে তারা। নিবার্চন কমিশন সরকারের ‘নীলনকশা’ বাস্তবায়নে কাজ করছে বলে বিএনপির অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার একথা বলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাযার্লয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা নিবার্চন বানচালের নীলনকশা লন্ডন থেকে করছে। আমাদের কোনো নীলনকশা নেই। আমাদের নীলনকশা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চনের।’ দুনীির্ত মামলার সাজা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় পদাধিকার বলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তার বড় ছেলে তারেক রহমান, যিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে প্রায় এক দশক ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নিবার্চনে গেলেও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছেন বিএনপি নেতারা। নিবার্চনের তফসিল ঘোষণার পরও ‘মিথ্যা ও গায়েবি’ মামলায় তাদের নেতাকমীের্দর গ্রেপ্তার করা হলেও নিবার্চন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। এই প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নিবার্চনের পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে দলটি। তাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, অসুস্থ পরিবেশ কোথায় সৃষ্টি হয়েছে এই নগরীতে? এই মুহূতের্ এই ঢাকা শহরে কোথায় পরিবেশ অসুস্থ? যেটুকু অসুস্থ হয়েছে সেটা পল্টনে তারা করেছে। আমি নিশ্চিত করে বলছি, আমাদের তরফ থেকে নিবার্চনের পরিবেশ বিঘিœত হবে না। ‘আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা করব না, এ ব্যাপারে আমাদের নেত্রী নেতাকমীের্দর সতকর্ করে দিয়েছে। কিন্তু তারা যদি বিশৃঙ্খলা-নাশকতা করতে চায় তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে।’ নিবার্চন নিয়ে কারও মধ্যে কোনো সংশয়-সন্দেহ নেই মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, কোনও মিডিয়াতে এ ধরনের সংশয় নিয়ে খবর প্রকাশ হয়নি। ইনশাআল্লাহ, নিবার্চন হবে। তারা সরে গেলেও হবে। নিবার্চন কারও জন্য আটকে থাকবে না। কেউ যদি সরেও যায়, নিবার্চন সরবে না। নিবার্চন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হব। এবার বিজয়ের উৎসবের মতো ভোট হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সরকার ‘রাক্ষসের মতো মানুষ খেয়ে ফেলছে’ এবং ১০ ডিসেম্বর থেকে জনগণ রাস্তায় নামবে বলে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার কী ভ‚মিকা পালন করছে সেটা জনগণ ৩০ তারিখের ভোটে বুঝিয়ে দেবে। মান্না সাহেব, অপেক্ষা করুন। ৩০ তারিখে বাংলার মানুষের রায়ে ভোট বিপ্লব হবে, তখন বুঝতে পারবেন আপনার ধারণা কত অবাস্তব। কয়েকটি আসনে দল ও ১৪ দলীয় জোটের প্রাথীের্দর পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকষর্ণ করা হলে কাদের বলেন, ৯ তারিখ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হবে। সোহরাওয়াদীর্র প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিক হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদীর্র মৃত্যুবাষির্কীতে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। সকালে হাইকোটর্ সংলগ্ন সোহরাওয়াদীর্র কবরে শ্রদ্ধা জানান দলটির নেতারা। ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতবষের্র স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বাংলার গুরুত্বপূণর্ রাজনৈতিক চরিত্র ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদীর্, পূবর্ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। মুসলিম লীগে গণতান্ত্রিক ও ধমির্নরপেক্ষ রাজনৈতিক ধারাকে এগিয়ে নিতে নেতৃত্বশীল ভ‚মিকা রাখেন সোহরাওয়াদীর্। পাকিস্তান আমলে তার নেতৃত্বেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেনের রোজ গাডেের্ন ‘পূবর্ পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ধমির্নরপেক্ষতার চচার্ এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরে এই দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে হয় আওয়ামী লীগ, যাদের নেতৃত্বে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের বৈরুতের এক হোটেলকক্ষে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদীর্। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদীর্ উপমহাদেশে রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার বণার্ঢ্য কমর্জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূণর্ পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি শ্রমজীবীসহ অবহেলিত মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বাথর্রক্ষায় গুরুত্বপূণর্ ভ‚মিকা পালন করেন।