চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার

অপশক্তি দু’দেশের মৈত্রীর বন্ধন ছিন্ন করতে পারবে না

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কোনো অপশক্তি ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর বন্ধন ছিন্ন করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানাজির্। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের ইঞ্জিনিয়াসর্ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে চসিক আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবধর্না অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে এই স্বাধীনতা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অজির্ত হয়েছে। এর জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছে। কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্য হতাহত হয়েছে। এক কোটি শরণাথীের্ক আশ্রয় দিয়েছে ভারত সরকার। তিনি বলেন, কোনো অপশক্তি ভারত-বাংলাদেশের এই মৈত্রীর বন্ধন ছিন্ন করতে পারবে না। বাংলাদেশের অগ্রগতিতে ভারতবাসী খুশি। ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২১ বছর আগে বাংলাদেশে এসেছিলাম। উন্নয়ন নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। আপনারা রোজ দেখছেন। রোজ দেখলে উন্নতি চোখে পড়ে না। আমার মতো ২০-২১ বছর পর আসলে সেটি চোখে পড়বে। এবার চসিকের পক্ষ থেকে ১৭০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবধর্না ও ১৭ লাখ টাকা সম্মানী দেয়া হয়। সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন দেশে আসেন তখন অথৈর্নতিক স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছিলেন। অথৈর্নতিক মুক্তি বড় চ্যালেঞ্জ। মেয়র বলেন, ভারত আন্তজাির্তক পযাের্য় জনমত গঠনে কাযর্কর উদ্যোগ নিয়েছে। দেশ গঠনে ভ‚মিকা রেখেছে। ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। যতদিন পৃথিবী থাকবে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূণর্ সম্পকর্ অটুট থাকবে। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যেভাবে দেশ স্বাধীন করেছেন, তেমনি অথৈর্নতিক মুক্তির জন্য কাজ করতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঠে নামতে হবে। অতিথি ছিলেন সাবেক এমএলএ আবু সালেহ, প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নাগির্স খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সাহাবউদ্দিন, নগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, চসিক সচিব আবুল হোসেন, সমাজকল্যাণ-বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর সলিম উল্লাহ বাচ্চু, শিক্ষা কমিটির সভাপতি নাজমুল হক ডিউক, প্রধান শিক্ষা কমর্কতার্ সুমন বড়ুয়া। আবু সালেহ বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ করেছিলাম স্বাধীনতার জন্য। সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে আমরা এগিয়েছি। স্বাগত বক্তব্যে চসিকের প্রধান নিবার্হী মো. সামসুদ্দোহা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কমছে। তাই আপনাদের আত্মত্যাগের কথা স্বজন, শুভানুধ্যায়ী ও জাতির কাছে রেখে যেতে হবে। মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, যখন মুক্তিযুদ্ধে যাই তখন ভারত আশ্রয়, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়েছিল। আমরা ভারতের কাছে ঋণী। ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মাচর্ শহীদদের স্মরণ করার জন্য, ফুল দেয়ার জন্য কোনো স্মৃতিসৌধ নেই। তিনি বলেন, একই মুক্তিযোদ্ধা যাতে বার বার সংবধর্না না পান এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা যাতে সংবধর্না না পায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চসিকের উদ্যোগে সাড়ে ২৬ লাখ টাকা করে ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিন, আবদুস সালাম, ইলিয়াস চৌধুরী এবং সোয়া ২৮ লাখ টাকা করে ব্যয়ে নূর আহমদ ও কুতুব উদ্দিন চৌধুরীর বাড়ি নিমার্ণ করা হচ্ছে। চসিক ২০১০ সালে ২৮০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে এক হাজার টাকা করে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা, ২০১১ সালে ৪৯ জনকে ১০ হাজার টাকা করে চার লাখ ৯০ হাজার টাকা সম্মানী দিয়েছে। ২০১২ সালে ৮৮ জনকে আট লাখ ৮০ হাজার, ২০১৩ সালে ৮০ জনকে আট লাখ, ২০১৪ সালে ৯৭ জনকে ৯ লাখ ৭০ হাজার, ২০১৫ সালে ১২০ জনকে ১২ লাখ, ২০১৬ সালে ১৫০ জনকে ১৫ লাখ টাকা এবং ২০১৭ সালে ১৫০ জনকে ১৫ লাখ টাকা দেয়া হয়।