বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মদিনে শেখ কামালকে স্মরণ

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ০৬ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র ও ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। জন্মদিনে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের এইদিনে তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদতবরণ করেন।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় শেখ কামালের সমাধিতে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এ সময় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ডক্টর মো. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তারা ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। এরপর মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। পরে নেতারা শেখ কামালের সমাধিতে ফুল ছিটিয়ে দেন।

এদিকে, শেখ কামালের জন্মদিনে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এ সময় বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন তিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম শেখ কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বলেন, 'শেখ কামাল মাত্র ২৬ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে কী করে যাননি! রাজনীতির রাজপথ থেকে শুরু করে খেলার মাঠ, নাট্যমঞ্চ থেকে যুদ্ধক্ষেত্র, সব জায়গায় রেখে গেছেন তার মেধা এবং সাহসের পরিচয়। তিনি দেশের ক্রীড়া এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উন্নতির যে সূচনা করেছিলেন, আজ তা সাফল্যের মুখ দেখছে।'

তিনি আরও বলেন, 'শেখ কামাল ছিলেন একজন তরুণ সংগঠক। '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন শেখ কামাল। তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তাকেও হত্যা করা হয়।'

মেয়র বলেন, 'শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় অনেক উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন ও বাংলাদেশ আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।'

শ্রদ্ধা নিবেদনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, কাউন্সিলর এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার বাদ জুমা বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এ সময় ডিএসসিসি মেয়র শহীদ শেখ কামালের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী রেহান সোবহান, সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় সংগঠনটির নেতারা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং শেখ কামালের রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। স্বাধীন বাংলাদেশে আবাহনী ক্রীড়া চক্র গঠন ও স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুব সমাজকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে মনোনিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শেখ কামাল।

'ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান ছিল সুদৃঢ়'

এদিকে শুক্রবার ঢাকায় ধানমন্ডি সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপেস্নক্সে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভালো ও দক্ষ সংগঠক হিসেবে শেখ কামালের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। আবাহনী ক্রীড়াচক্র শেখ কামালের নিজের হাতে গড়া সংগঠন। শুধু রাজনৈতিক কারণে তার চরিত্র হরণের অনেক অপচেষ্টা করা হয়েছে। ন্যায়ের পক্ষে তার অবস্থান ছিল সুদৃঢ়।

তিনি আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ কামালসহ একই ক্যাম্পে ট্রেনিং করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তিনি একজন দক্ষ সেনাকর্মকর্তা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমি খুব কাছে থেকে তার সততা ও সাহসিকতা দেখেছি। তার মতো নেতা এবং সাহসী সংগঠক খুব কমই ছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নির্মম হত্যাকান্ডের সময় শেখ কামালকে প্রথম হত্যা করা হয়েছিল। দেশের রাজনীতি, ক্রীড়াঙ্গন এবং সংস্কৃতি জগতে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত বিভাগগুলোর প্রধান এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আবাহনী খেলার মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আলোচনা সভা শেষে শেখ কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়াও করা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) মাহফুজা আখতার, বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডক্টর মো. জাফর উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক শেখ রফিকুল ইসলাম, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড ফার্মগুলোর প্রধান নিয়ন্ত্রক শেখ সোয়েবুল আলম মজুমদার, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রি. জে. মো. আরিফুল হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মালেকা খায়রুননেছা। এছাড়া অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাংস্কৃতিক ও কল্যাণ পরিষদের সহসভাপতি মো. শওকত হোসেন বক্তব্য রাখেন।

'ক্রীড়া ক্ষেত্রে ছিল অসামান্য অবদান'

এদিকে, শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে 'সম্প্রীতি বাংলাদেশ'-এর আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামালের রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে আবাহনী ক্রীড়াচক্র গঠন ও স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুবসমাজকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে মনোনিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

আলোচনা সভায় ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, 'শেখ কামালের পদ-পদবি নিয়ে কোনো চিন্তা ছিল না। তিনি ছাত্রলীগের কেবল সদস্য ছিলেন, সে অবস্থাতেই তিনি ঊনসত্তরের গণঅভু্যত্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি সময়েই মিছিল-মিটিংয়ে কর্মী থেকে সংগঠক হিসেবে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।'

শেখ কামাল কখনও পিতার পরিচয়ে পরিচিত হতে চান নাই মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'কামালের মাঝে বহুমুখী প্রতিভা ছিল। একাধারে তিনি ছিলেন নাট্যকার, ক্রীড়া সংগঠক। তিনি সত্তরের দশকে আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করে বিদেশি কোচ নিয়ে এসে ক্রীড়াঙ্গনে আলোড়ন তুলেছিলেন।'

শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুরুল আলম বলেন, 'শেখ কামাল মেধাবী ছাত্র ছিলেন, ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন, বাস্কেটবল খেলতেন। শেখ কামাল ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।'

শেখ কামালের আরেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাওহীদ হোসেন বাদল বলেন, 'বিরোধীগোষ্ঠী শেখ কামালের মতো মানুষকেও কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট দেশের প্রতি শেখ কামালের অবদান ও কর্ম কত মহৎ ছিল।'

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, '১৫ আগস্টের পরে ঢাবি সিনেটে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড ও ঢাবির দুই ছাত্রের (শেখ কামাল ও সুলতানা কামাল) হত্যার নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।'

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, 'শেখ কামালকে নিয়ে একটি গোষ্ঠী প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছিল। কিন্তু শেখ কামাল সবার জন্য অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।'

সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'শেখ কামালের আদর্শ ছড়িয়ে দিতে সবাইকে আরও কাজ করতে হবে।'

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন 'সম্প্রীতি বাংলাদেশ'-এর সদস্য সচিব বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডক্টর মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান।

'শেখ কামালের অবদান অনস্বীকার্য'

এদিকে, শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, 'শেখ কামাল ছিলেন অদম্য বিনম্র সংস্কৃতিবান। তিনি ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ও সংগঠক হিসেবে ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলন এবং ৬৯'র অগ্নিঝরা গণআন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতার অধিকারী শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধেও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ কল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম। আরও উপস্থিত ছিলেন- কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক, সাহেদ ইকবাল বাবু, হাসান মুরাদ বিপস্নব, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, শৈবাল দাশ সমুন, পুলক খাস্তগীর, নুর মোস্তফা টিনু, সংরক্ষিত কাউন্সিলর তসলিমা বেগম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু প্রমুখ। মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সিটি করপোরেশনের মাদ্রাসা পরিদর্শক মাওলানা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী।

মিলাদ ও আলোচনা শেষে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের সঙ্গে নিয়ে সিটি করপোরেশন চত্বরে স্থাপিত শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাতীয় মসজিদে

বিশেষ দোয়া

এদিকে, শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমীন। মোনাজাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল কাদের শেখ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কায়সার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডক্টর মুহাম্মদ আবদুস সালাম, মোহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার, মো. আনিছুর রহমান সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ও মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের গণশিক্ষা কেন্দ্রসমূহে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত

এদিকে, শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সরকারি বাসভবন থেকে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত এবং ডাটা কার্ড ও বিশেষ সীলমোহর প্রকাশ করেছে ডাক অধিদপ্তর। অবমুক্ত করা স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খামের মূল্য ১০ টাকা। ডাটা কার্ডের মূল্য ৫ টাকা। এ সময় একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করা হয়।

উদ্বোধন শেষে এক বিবৃতিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, শেখ কামাল বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন। ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী ও আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে '৬৯-এর গণঅভু্যত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে শেখ কামাল ছিলেন প্রথম সারির সংগঠক।

মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, আমি নিজেও অত্যন্ত সৌভাগ্যবান। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে ৭১-এর উত্তাল দিনগুলোতে আমার লেখা 'এক নদী রক্ত' নাটকে শেখ কামালের মতো একজন প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব অভিনয় করেছিলেন। সেই নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে তিনি আহতও হন।

বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে শেখ কামাল গড়ে তুলেছিলেন 'স্পন্দন' শিল্পীগোষ্ঠী। এছাড়াও তিনি ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। তিনি সাত রং নাট্যগোষ্ঠীরও সদস্য ছিলেন। শেখ কামাল উপমহাদেশের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠন ও আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে