৮৬ পরিচ্ছন্নতাকমীর্র সমান কাজ করছে ‘রোড সুইপার’

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রাস্তা পরিষ্কার করছে রোড সুইপার Ñযাযাদি
যাযাদি রিপোটর্ রাজধানীর রাস্তার ধুলোবালি ও আবজর্না পরিষ্কার করতে নামানো অত্যাধুনিক ‘রোড সুইপার’টি বেশ কাজেই দিচ্ছে। ধুলোবালি থেকে শুরু করে কঠিন বজর্্য নিমিষেই পরিষ্কার করতে সক্ষম হচ্ছে যন্ত্রটি। প্রযুক্তিনিভর্র এই রোড সুইপার একদিকে যেমন অথর্সাশ্রয় করছে অন্যদিকে রাস্তাও হচ্ছে ঝকঝকে। একমাত্র রোড সুইপারটি দুটি রুটে প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পযর্ন্ত রোড সুইপ করছে, যাতে দিনে গড়ে রাস্তা পরিষ্কার হচ্ছে ১৮ কিলোমিটার। অত্যাধুনিক এই যন্ত্র রাস্তায় নামানোর পর পরিকল্পনা ছিল ভালো ফলাফল দিলে ভবিষ্যতে পুরো উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার বজর্্য ব্যবস্থাপনা কাযর্ক্রমের সিংহভাগ এ যন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান বজর্্য ব্যবস্থাপনা কমর্কতার্ কমডোর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘণবসতিপূণর্ এলাকা হিসেবে রাজধানীতে গুণগত বজর্্য ব্যবস্থাপনায় যেতেই হবে। রোড সুইপারটি ভালো ফল দিচ্ছে। এই রোড সুইপার ‘ইকোনমিক্যাল’ এবং কাযর্করী; যা শলার ঝাড়ু দিয়েও পরিষ্কার করা যায় না, সেখানে এই রোড সুইপার অনেক বেশি কাযর্কর। গত ৫ মাচর্ রাজধানীর দুটি রুটে পরীক্ষামূলকভাবে রোড সুইপারটি নামানো হয়। চালুর পর থেকে ৩০ জুন পযর্ন্ত ৮৩ দিনে ৩৯৩ ঘণ্টা রাস্তা সুইপ করে এক হাজার ২৭৯ কিলোমিটার রাস্তা পরিষ্কার করেছে যন্ত্রটি। এই সময় যন্ত্রটি দুটি রুট থেকে ৩ লাখ ২১ হাজার কিলোগ্রাম বজর্্য অপসারণ করেছে। অত্যাধুনিক রোড সুইপারটি বতর্মানে ঘণ্টায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার রাস্তা পরিষ্কার করছে। ধুলার তীব্রতা কম থাকলে এর স্পিড হয় ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার। তবে ঢাকার বাস্তবতায় ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটারের বেশি কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিসংখ্যান বলছে, যন্ত্রটি প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৮৬৩ কিলোগ্রাম বজর্্য অপসারণ করছে। এই পরিমাণ বজর্্য অপসারণ করতে একদিন ৮৬ জন পরিচ্ছন্নতাকমীর্র প্রয়োজন হতো। শুধু তাই নয়, রাস্তা পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় পরিচ্ছন্নতাকমীর্রা দুঘর্টনার শিকার হতেন, রোড সুইপারের কল্যাণে সেটি থেকেও রক্ষা পেয়েছেন কমীর্রা। রোড সুইপারটি দেখতে অনেকটা কাভাডর্ভ্যানের মতো। এর ইঞ্জিন দুই ভাগে বিভক্ত। একটির কাজ পথ মাড়ানো। অন্যটির কাজ রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া। সুইপার যন্ত্রটির সামনের দিকে রয়েছে দুটি সাকশন (শোষণ) পাইপ। প্রতিটি পাইপ একসঙ্গে দেড় ফুট ব্যাসের জায়গার ময়লা-আবজর্না শুষে নিতে পারে। যন্ত্রটি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার ময়লা সাকশন পাইপের মাধ্যমে ওপরে অবস্থিত গাবের্জ ট্যাঙ্কারে জমা হয়। আরেকটি ইঞ্জিনের মধ্যমে গাড়িটি ধীরে ধীরে চলার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার সব ময়লা-আবজর্না শুষে ট্যাঙ্কে নিয়ে যাবে। ট্যাঙ্কে ছয় টন বজর্্য ধারণ করতে পারে। এ ছাড়া একটি পৃথক পানির ট্যাঙ্কও রয়েছে। প্রয়োজনে ট্যাঙ্ক থেকে পৃথক পাইপের মাধ্যমে রাস্তায় পানি ছিটিয়েও রাস্তা পরিষ্কার করা যাবে। বতর্মানে প্রতিদিন চার থেকে পঁাচ ঘণ্টা যন্ত্রটি চালানো হচ্ছে। আপাতত মানিক মিয়া এভিনিউ, খেজুরবাগান, ক্রিসেন্ট লেক, বিজয় সরণি, ইন্দিরা রোড, গণভবন, সংসদ ভবনের আশপাশে পরিচ্ছন্নতার কাজে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। উন্নতমানের এ রোড সুইপারটির চেসিস জাপানের হিনো কোম্পানির। আর সুইপার মেশিনটি ব্রিটেনের বিখ্যাত জনস্টন কোম্পানির। তারা তিন বছরের গ্যারান্টি দিয়েছে। এটির দাম চার কোটি ৯৫ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডের একটি টেকনিক্যাল টিম যন্ত্রটি পরিচালনার জন্য তিনজনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ রাখতে পারলে যন্ত্রটি ১০ থেকে ১২ বছর কাজ করতে সক্ষম হবে।