মরদেহ গুম করে সাজলেন সাক্ষী

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
র‌্যাবের হাতে আটক শাহজাহান, খোকন ও মুকুল মিয়া Ñযাযাদি
পারিবারিক কোন্দলের জেরে স্ত্রীকে খুন করেন গাজীপুরের বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া। তখনই তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন বন্ধু খোকন মিয়া ও মুকুল মিয়া। তিন বন্ধু মিলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে গভীর রাতে বাড়ির পাশের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন মরদেহ। বন্ধুকে সহায়তা করার জন্য আথির্ক সাহায্য নিলেও পরে ঘটনার সাক্ষী বনে যান খোকন ও মুকুল। তারাই স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে গিয়ে বন্ধুর কুকমের্র কথা বলেন। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় শাহজাহান তার স্ত্রীর মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিতে দেখেছেন বলেও জানান তারা। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সপ্তাহ পার হতেই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১। মূল আসামি শাহজাহানসহ আটক করেন সহযোগী খোকন ও মুকুলকে। গত ৩ জানুয়ারি গাজীপুরের ভাওরাইদ এলাকার নিজ বাসায় স্ত্রী আফরোজা বেগমকে (২৬) শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন শাহজাহান। এরপর এ চাঞ্চল্যকর ঘটনার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাতে ডেমরা এলাকা থেকে তিনজনকে আটক করে র‌্যাব-১। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা জানান র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কনের্ল সারোয়ার বিন কাশেম। তিনি বলেন, ৮ বছর আগে সুতার মিলে কাজ করার সময় শাহজাহান ও আফরোজার মধ্যে প্রেমের সম্পকর্ গড়ে ওঠে। এরপর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার শুরু করলেও তাদের পারিবারিক জীবনে কলহ লেগে থাকত। বিভিন্ন সময় স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করতেন শাহজাহান। ২০১৬ সালে আফরোজা কাজের উদ্দেশে সৌদি আরবে যান এবং গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ফিরে আসেন। স্ত্রীর কাছে বিদেশে অজির্ত টাকার হিসাব চাইলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্ব›দ্ব চরমে পৌঁছায়। গত ৩০ ডিসেম্বর আফরোজা ভোট দিতে গেলে বাড়ি ফেরার পর কোথায় গিয়েছিল জানতে চেয়ে তাকে মারধর করে শাহজাহান। ৩ জানুয়ারি সকালে বাক-বিতÐার একপযাের্য় তাদের একমাত্র মেয়েকে পাশের ঘরে রেখে স্ত্রী আফরোজাকে গলা টিপে হত্যা করে শাহজাহান। এরপর খাটের নিচে মরদেহ লুকিয়ে রাখেন। র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, এ অবস্থায় সাহায্য করার জন্য বন্ধু খোকন ও মুকুলকে বাসায় ডাকেন শাহজাহান। তিনজন মিলে ওইদিন রাতে বাসার পাশে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন আফরোজার মরদেহ। এ জন্য শাহজাহানের কাছ থেকে খোকন ৪ হাজার এবং মুকুল ২ হাজার ৫০০ টাকা নেন। টাকা নিয়ে খোকন ও মুকুল ভাবে ঘটনার জানাজানি হয়ে গেলে তারা ফেঁসে যেতে পারেন। তাই নিজ থেকে স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানান। তারা বলেন, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শাহজাহানকে সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলতে দেখেছেন। এরপর মরদেহ উদ্ধার হলে খোকন ও মুকুল হয়ে যান ঘটনার প্রত্যক্ষদশীর্। ঘটনার পর থেকেই শাহজাহান পলাতক ছিলেন। পরে তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনার মূল অভিযুক্ত শাহজাহান এবং সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে খোকন ও মুকুলকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান সারোয়ার বিন কাশেম।