নিয়ম মানুন, যানজট কমবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ উদ্বোধন

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মঙ্গলবার ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ’ উদ্বোধন শেষে সচেতনতামূলক লিফলেট গাড়িতে লাগিয়ে দেন Ñযাযাদি
সবাই যদি নিয়ম মানে, তবে সড়কে যানজট অনেকটাই কমেÑ একথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ঢাকায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে মঙ্গলবার ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ’ উদ্বোধন করে সবাইকে নিয়ম মানার আহŸান জানিয়েছেন তিনি। ১৫ থেকে ৩১ জানুয়ারি এই ১৫ দিন দেশবাসীকে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার পদ্ধতি জানানোর চেষ্টা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুপুরে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানে বেলুন উড়িয়ে ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ উদ্বোধন করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের চেষ্টার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘তারপরও সম্মানিত ঢাকাবাসীর উদ্দেশ্যে ট্রাফিক পক্ষ পালন করতে যাচ্ছি। বুকলেট ও প্রচারের মাধ্যমে নগরবাসীর কী কতর্ব্য, তা জানাতে চেষ্টা করছি।’ সবাই যদি ট্রাফিক নিয়ম-কানুন মেনে। তাহলে দুবির্ষহ যানজট কিন্তু অনেকটাই কমে যাবে। পথচারীদের ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহারের পরামশর্ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে সচেতন করতে চাই যে আপনাদের জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’ ফুটপাত ছেড়ে হুটহাট করে সড়কে না নামার আহŸানও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গাড়ি, মোটরসাইকেল চালানোর সময় এবং রাস্তা পার হওয়ার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করতেও বলেন তিনি। দুই শিক্ষাথীর্ বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর শিক্ষাথীের্দর নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ থেকে ১৪ আগস্ট ঢাকা মহানগরীতে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করা হয়েছিল। তখন কিছু পদক্ষেপে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও পরে আবার ঢাকার সড়কগুলো আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এবারের অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া দাবি করেন, ওই সময়ের পর পরিস্থিতির ‘দৃশ্যমান উন্নতি’ হয়েছে। ‘এখন আর হেলমেট ছাড়া কাউকে মোটরসাইকেল চালাতে দেখা যায় না।’ ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরে ১৩০টি বাস স্টপেজ চিহ্নিত করে সাইনবোডর্ দেয়া হয়েছে বলে জানান কমিশনার। তিনি বলেন, স্টপেজগুলো আরও সুন্দরভাবে তৈরি করার জন্য সিটি করপোরেশনের থেকে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে ৫৭ পয়েন্টে ‘চেকপোস্ট’ বসানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং জনগণকে সচেতন করা, দায়িত্বশীল করা।’ ঢাকা শহরে যানজট বাড়ার জন্য উন্নয়ন কমর্কাÐকে দায়ী করেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সড়কের যে গতি কমেছে, এটাকে সহনশীল রেখে কীভাবে মানুষকে কমর্স্থলে আনা যায় এবং তারা বাড়িতে ফিরে যেতে পারে।’ চেষ্টা চালালেও জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যানজট কমেনি বলে স্বীকার করেন আছাদুজ্জামান মিয়া। কারণগুলো চিহ্নিত করে তিনি বলেন, ‘গাড়ির আধিক্য ও আইন না মানার অপসংস্কৃতি। বড় সমস্যা আইন না অভ্যাস। যত্রতত্র গাড়ি রাখা, পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো, এগুলো পরিহার করা দরকার।’ ট্রাফিক শৃঙ্খলার পক্ষে যেসব কাযর্ক্রম চলবে >> ট্রাফিক সচেতনতামূলক লিফলেট, প্ল্যাকাডর্, ফেস্টুন, গাইড বই বিতরণ। >> সম্মানিত নাগরিকদের নিয়ে ট্রাফিক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন। >> রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গালর্ গাইডস, বিএনসিসি সদস্যদের ট্রাফিক কাযর্ক্রমে সম্পৃক্ত করা। >> ঢাকা সিটি কপোের্রশন উত্তর ও দক্ষিণের সাথে সমন্বয় করে জেব্রা ক্রসিং, রোড মাকির্ংগুলো দৃশ্যমান ও স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ। >> মূল সড়কের পাশে অবস্থিত স্কুল কলেজের ক্লাস শুরু এবং ছুটির সময়ে ওই সব এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ও স্কুল কলেজের ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা এবং এসব অঞ্চলে যথাযথ ট্রাফিক সাইন স্থাপন করা। >> হাইড্রলিক হনর্, দ্রæতগতির যানবাহন, বেপরোয়া গতি, হুটার, বিকন লাইট, উল্টো পথে চলাচল এবং মোটর সাইকেলের আরোহীদের হেলমেট পরিধানসহ সকল প্রকার ট্রাফিক আইন লংঘনের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিশেষ ট্রাফিক অভিযান এবং মোবাইল কোটর্ কাযর্ক্রম অব্যাহত রাখা। >> ঢাকা মহানগরী এলাকার গুরুত্বপূণর্ ২৯টি পয়েন্টে চেকপোস্ট কাযর্ক্রম অব্যাহত রাখা। >> ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূণর্ ৩০টি ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধকরণে পুলিশ সদস্য মোতায়েন কাযর্ক্রম অব্যাহত রাখা। >> গাড়ি চালানোর সময় স্টপেজ ব্যতীত সকল সময় গাড়ীর দরজা বন্ধ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ। >> জেব্রা ক্রসিং এর আগে স্টপ লাইন বরাবর গাড়ি থামানো এবং স্টপেজ ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি থামানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাম লেইন ঘেঁষে নিধাির্রত স্টপেজে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা নিশ্চিত করা। >> ভিডিও মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি করা। >> মডেল করিডোর হিসেবে ঘোষিত বিমানবন্দর হতে শহীদ জাহাঙ্গীর গেট, ফামের্গট, সোনারগঁাও, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, পুরাতন হাইকোটর্ হয়ে জিরো পয়েন্ট পযর্ন্ত ভিআইপি সড়কের ইন্টারসেকশনসমূহে রিমোটর্ কন্ট্রোল সরবরাহ নিশ্চিত করে অটোমেটিক ও রিমোটর্ কন্ট্রোলের মাধ্যমে সিগন্যাল পরিচালনা করা। >> ফামের্গট থেকে সাতরাস্তা পযর্ন্ত রাস্তাটিকে গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা।