বসন্ত আসার আগেই জলবসন্তের প্রকোপ

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জলবসন্ত আক্রান্ত এক রোগী Ñযাযাদি
বসন্ত আসার আগেই জেঁকে বসেছে জলবসন্ত রোগ। সংক্রামক এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্করা। চট্টগ্রাম নগর ও আশপাশের উপজেলায় বসন্ত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে বয়স্কদের চেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত শীতের শেষের দিকে এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। গরমে বসন্ত রোগ বেড়ে যায়। শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বয়স্করাও আক্রান্ত হচ্ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালসহ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, জলবসন্তে আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে। তবে চিকিৎসকরা এ ধরনের রোগীকে হাসপাতালের পরিবতের্ ঘরে রাখার পরামশর্ দিচ্ছেন। নিবিড় পরিচযার্র মাধ্যমে এ রোগ দ্রæত সেরে যায় বলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। চার বছর বয়সী ফয়সাল মেহরাজ ১৩ জানুয়ারি থেকে এ রোগে আক্রান্ত। একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে। ফয়সালের মা শামসুন নাহার বলেন, কয়েক দিন জ্বর ও ব্যথার মাত্রা ছিল বেশি। যন্ত্রণায় সে ছটফট করতো। তবে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। সাত বছর বয়সী এলিনা তাবাসসুম ১৫ জানুয়ারি থেকে জলবসন্তে আক্রান্ত। তার বাবা আজিজুল কাদির বলেন, ‘আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। চিকিৎসক ওষুধ সেবনের পাশাপাশি ভালোভাবে পরিচযার্র পরামশর্ দিয়েছেন।’ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভালোভাবে পরিচযার্ করলে দ্রæত এ রোগ সেরে যায়। ভ্যাকসিন দিলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। চমেক হাসপাতালের বহিবির্ভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন একাধিক জলবসন্তের রোগী আসছে। তবে তাদের হাসপাতালে ভতির্ না করিয়ে বাসায় রাখতে বলা হচ্ছে। হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, বসন্ত রোগের দুটি উপাদানের মধ্যে গুটিবসন্ত নিমূর্ল হয়ে গেছে। এখন আক্রান্ত হচ্ছে জলবসন্তে। ‘ভ্যারিসিলা জস্টার’ নামের ভাইরাসের কারণে জলবসন্ত হয়। যেকোনো বয়সেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও শিশুরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে বেশি।’ রোগটির লক্ষণ সম্পকের্ ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে হাত-পায়ে ব্যথার পর শরীরে ঘামাচির মতো রেশ উঠতে দেখা যায়। তারপর সেগুলো একটু বড় হয়ে ভেতরে পানি জমতে থাকে। এরপর রোগীর অনেক জ্বর আসবে। শরীরে প্রচÐ ব্যথা হবে আর সঙ্গে সদির্-কাশিও। খুব দ্রæতই রোগী দুবর্ল হয়ে যায়। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, জলবসন্ত ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। এটির প্রতিষেধক ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিন নিলে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এ ছাড়া আক্রান্ত হলে রোগীকে চিকিৎসকের পরামশর্ অনুযায়ী পরিচযার্ করলে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেরে ওঠে। ডা. আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, এ রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে হলে রোগীকে অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে। রোগীর ব্যবহাযর্ সবকিছু আলাদা করে সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পযর্ন্ত রোগীর নিবিড় পরিচযার্ নিশ্চিত করতে হবে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, জলবসন্তে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে এ বিষয়ে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।