‘ভুয়া ভোটে’ জিতে বেপরোয়া ক্ষমতাসীনরা: রিজভী

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন Ñফোকাস বাংলা
ভোটের পর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকমীর্রা ‘পৈশাচিক উল্লাসে বেপরোয়া’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সুবণর্চরের পর নোয়াখালীর কবিরহাটে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধষের্ণর উদাহরণ দিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের ভোট দেওয়ার অপরাধে সুবণর্চরের নিযাির্ততা পারুল বেগমের আহজারি ও গোঙানি থামতে না থামতেই নোয়াখালীর কবিরহাটে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে মা ও ছেলেমেয়েদের জিম্মি করে তিন সন্তানের মাকে স্থানীয় যুবলীগের কমীর্রা গণধষর্ণ করেছে।’ গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের পর রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে সুবণর্চরে এক নারীকে ধষের্ণর অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগের এক নেতার ‘সাঙ্গোপাঙ্গোদের’ বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই শুক্রবার রাতে কবিরহাটে ঘরের সিঁধ কেটে ঢুকে আরেক গৃহবধূকে ধষের্ণর খবর আসে। এরই মধ্যে ওই ঘটনার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কবিরহাটের নিযাির্তত গৃহবধূর রাজমিস্ত্রি স্বামী ভোটের আগে মারামারির এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তবে ওই গৃহবধূর স্বামীকে স্থানীয় যুবদলের নেতা হিসেবে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ধষির্তার স্বামী ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, যিনি মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি। এই গণধষর্ণ শুধু হৃদয়বিদারকই নয়, মনুষ্যত্বহীনতার এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত।’ তিনি বলেন, ‘ভুয়া ভোটের মিথ্যা জয়ে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকমীর্রা পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছে। কুৎসিত অপকমর্ করতে তারা এখন বেপরোয়া। আমি নোয়াখালীর কবিরহাটে ধষের্ণর ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’ কবিরহাটে নিযাির্তত নারীর পাশে দঁাড়াতে দলের নেতাকমীের্দর আহ্বান জানান রিজভী। ল²ীপুরের বসিকপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়াডের্ স্থানীয় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুননবীকে গুলি করে আহত করার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার দাবি করেন তিনি। শনিবার সোহরাওয়াদীর্ উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে ‘গণতন্ত্র হত্যার উৎসব’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী। ‘শনিবার সোহরাওয়াদীর্ উদ্যানে জনগণের পকেট কাটার টাকায় বণার্ঢ্য র‌্যালি ছিল রাষ্ট্রের মালিক জনণের আরেকটি অবজ্ঞাভরা মশকরা। এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়াদীর্ উদ্যানকে শনিবার গণতন্ত্র হত্যার উৎসবে পরিণত করা হলো।’ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন জনগণ নাকি এবার স্বতঃস্ফূতর্ভাবে ভোট দিয়েছে। তার এমন বক্তব্যে জনগণ হাসবে না কঁাদবে, ভেবে পাচ্ছে না। যখন মহাভোট ডাকাতিতে ভোটাধিকার হারা জনগণ ব্যথিত, বিমষর্ ও বাক্যহারা তখন তাদের নিয়ে এই ধরনের বক্তব্য নিষ্ঠুর রসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ‘জনগণ মনে করে, ভুয়া ভোটের সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। কারণ ভোটের আগের দিন রাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের ভোটের অধিকারটা নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। তারাই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে রাতভর ব্যালট বাক্সে নৌকা মাকার্য় সিল দেওয়া ব্যালট পেপার ভরিয়ে দিয়েছে। ভোট জালিয়াতি করতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ক্ষমতাসীনদের পাশে দঁাড়িয়েছে। সুতরাং গোপনে উৎকোচ দেওয়া হলেও প্রকাশ্যে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর।’ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।