মিরপুর-২ নম্বর

উন্নয়ন না দুভোর্গ, প্রশ্ন এলাকাবাসীর

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
গাবতলী থেকে মিরপুর-২ নম্বর সেক্টরের ‘এইচ’ বøকে এসে থামল সিএনজি চালিত অটোরিকশা। চালক আর সামনে যাবেন না। ভেতরে বসে থাকা বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে নিরুপায় আকমল হোসেন। যাচ্ছেন ‘এইচ’ বøকের ৫ নম্বর রোডের শেষ মাথায় বোনের বাসায়। আকমল হোসেন হেঁটে যেতে পারলেও বাবা আজগর হোসেনের জন্য এতটা পথ হেঁটে যাওয়া কষ্টকর। তাই বাগবিতÐায় জড়িয়ে পড়েন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে। চালক যেতে চাচ্ছেন না সড়কের বেহাল দশার কারণে। ম্যানহোল ও রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য গাড়ি নিয়ে যাওয়া প্রায় দুরূহ। এক পযাের্য় হেঁটেই রওনা হলেন বাবা-ছেলে। আহমেদ রুশদী পুরো পরিবার নিয়ে বেরিয়েছেন। যাচ্ছেন উত্তরায় শ্বশুরের বাসায়। তাদের ৮ নম্বর রোডেও চলছে উন্নয়ন কাজ। তাই কোনো গাড়ি, রিকশা চলাচল করে না। হেঁটে চলার এক পযাের্য় পঁাচ বছরের ছেলে আইমানের পা পিছলে ম্যানহোলের ঢাকনার অংশটিতে লেগে পা মচকে যাওয়া মতো অবস্থা । কিছুতেই ছেলের কান্না থামাতে পারছেন না রুশদী। অবশেষে স্ত্রীকে বাসায় পাঠিয়ে ছেলেকে নিয়ে ছুটলেন ডাক্তারের কাছে। মিরপুর-২ নম্বর সেক্টরের এই এলাকাটিতে এমন ঘটনা নিত্যদিনের। প্রবীণ, অসুস্থ, রোগী কিংবা শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কাছেই উন্নয়ন কমর্যজ্ঞ এখন দুভোের্গ পরিণত হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার ‘এইচ’ বøকে সকল রোডেই একসঙ্গে চলছে ম্যানহোল ও রাস্তা উন্নয়নের কাজ। বতর্মানে ম্যানহোলের কাজ শেষ হলেও ঢাকনার অংশটি মূল সড়ক থেকে একটু উঁচু করে তোলা হয়েছে। হয়তো রাস্তাটিও উঁচু করে লেবেল করা হবে। বতর্মানে রাস্তা নিচু থাকায় এবং ম্যানহোলের ঢাকনার অংশগুলো উঁচু হওয়ায় রীতিমতো দুঘর্টনার নিয়ামকে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলা বিদ্যুৎ না থাকলে প্রতিনিয়তই ঘটে ছোট-বড় বিপত্তি। রহিম উদ্দীন নামে এক চা দোকানি জানান, বুধবার রাতেও একজন লোক ম্যানহোলের ঢাকনায় হেঁাচট খেয়ে পড়ে গিয়ে ঠোঁট কেটে ফেলেছেন। প্রায়ই হেঁাচট খেয়ে আহত হন সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন এটা কি উন্নয়ন কমর্যজ্ঞ নাকি দুভোর্গ। কেননা, প্রায় পাঁচ মাস হয়ে গেলেও এখনো কাজ অধের্ক হয়নি। ম্যানহোলের কাজ শেষ হলেও, এখনও শুরু হয়নি রাস্তা সংস্কারের কাজ। আব্দুল হান্নান নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, একসঙ্গে সকল রাস্তার কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ফলে পুরো এলাকার মানুষই দুভোের্গর মধ্যে পড়েছে। উন্নয়ন কাজ তো করতেই হবে। কিন্তু এমন অরক্ষিত কেন? মানুষ আহত হচ্ছে অহরহ। এটা বিবেচনায় নিয়ে দ্রæত কাজ শেষ করা উচিত। ৮ নম্বর রোডের বাসিন্দা ইয়াসিন মিয়া বলেন, উন্নয়ন আমাদের সুবিধা আনবে। কিন্তু এখন যে অবস্থায় আছে সেটা কি উন্নয়ন না দুভোর্গ? অন্তবর্তীর্ সময়ে যে দুভোর্গ হচ্ছে সেটা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত ছিল কতৃর্পক্ষের। ম্যানহোলের কাজ শুরুর সময় চলাচলেরই কোনো উপায় ছিল না। মাটি খুঁড়ে রাস্তার উপরে রাখার কারণে সে এক অবস্থা দাঁড়িয়েছিল। আর এখন রাস্তার মাঝখানে একটু পরপর ম্যানহোলের উঁচু ঢাকনা। এটা রীতিমতো আতঙ্কের। কোনো গাড়ি যেতে পারে না, হাঁটতে গেলে হোঁচট খেতে হয়। এভাবে আর কতদিন চলবে প্রশ্ন তারও। সাধারণ মানুষের দুভোর্গ নিরসনে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, উন্নয়ন কাজটি তারা করছে না বলে জানায়। সংস্থাটির পরিচালক (টেকনিক্যাল) শহীদ উদ্দীন বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আমরা কোনো ম্যানহোলের কাজ করছি না। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনই (ডিএনসিসি) তাদের নিজেদের মতো করে করছে। রাস্তা যেহেতু তাদের আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো পরামশর্ই করছে না। বিষয়টি নিয়ে ডিএনসিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। ডিএনসিসির প্রধান নিবার্হী কমর্কতার্ মেজবাউল ইসলামকে মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।