গণশুনানির নামে 'ঘুমানো চক্র' ষড়যন্ত্র করছে: আইনমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, '২০১৪ সালে খালেদা জিয়া আন্দোলনের চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস করেন। জনগণ কিন্তু সায় দেয়নি। আবার তারা ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এরপর গণশুনানি করে ষড়যন্ত্র করছে।' একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত গণশুনানির বিষয়ে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, 'ষড়যন্ত্র কিন্তু শেষ হয়নি। এই যে ঘুমানো চক্র (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) দেখছেন, তারা কিন্তু একটি জিনিসই পারেন। আর তা হলো ষড়যন্ত্র করা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও তারা ষড়যন্ত্র করছেন।' সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। আনিসুল হক বলেন, '১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রম্নয়ারি খালেদা জিয়া ভোটারবিহীন একটি নির্বাচন করেছিলেন। ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছিল বলেই আন্দোলনের মাথায় দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হয়েছিল। উনারা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছর এ দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই পাঁচ বছর জনগণ উপকৃত হয়েছে, তাই আন্দোলন হয়নি। কিন্তু ২০১৪ সালে খালেদা জিয়া আন্দোলনের চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। জনগণ কিন্তু তার সঙ্গে সায় দেয়নি। আবার তারা ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এখন আবারও ষড়যন্ত্র করছেন।' একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির একই মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গণশুনানি করে। এই গণশুনানির প্রতি ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তারা এখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে 'অডিটরিয়াম শুনানি' করছেন। তারা বলছেন, এখানে (গত ৩০ ডিসেম্বর) নাকি নির্বাচন হয়নি। তাদের ওই অনুষ্ঠানে একজনও জনগণ নেই। তারা ঘুমিয়েছেন এখানে বসে। এরপরও উনারা বলছেন, উনারা নাকি এখানে গণশুনানি করেছেন।' আইনমন্ত্রী আরও বলেন, 'জনগণ তো শেখ হাসিনার সঙ্গে, উনাদের সঙ্গে তো নেই। উনাদের সঙ্গে জনগণ নেই বলেই তাদের অডিটরিয়ামে বসে শুনানি করতে হয়, সে ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে গণশুনানি করেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আর এখানেই হলো শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের পার্থক্য।' অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত করেছেন। তিনি একটি ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হবে, সেই দ্বার প্রান্তে কিন্তু আমরা পৌঁছে গেছি। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত হবে বাংলাদেশ। এ দেশকে খালেদা জিয়া এবং কামাল হোসেনরা পাকিস্তানের পেছনে রাখতে চায়। আর সেই বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বিশ্বের সেরা ৫০টি দেশের মধ্যে একটা। এত বাধা রয়েছে, এরপরও বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে মাথা উঁচু করে রয়েছে। আর ২১০০ সালের বদ্বীপ পরিকল্পনা কেউ দিয়েছিল? একমাত্র শেখ হাসিনা সেই পরিকল্পনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সেই পরিকল্পনাকে সামনে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আপনারা এগিয়ে যাবেন। আর রাজাকার-আলবদররা যদি বাধা দেয়, তবে আন্দোলন করে সেই বাধা পিষ্ট করে দেবেন।' আইনজীবী সহকারীদের জন্য পৃথক আইন প্রণয়নের বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন আইনমন্ত্রী। বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি মো. মোহাম্মদ নূর মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম, রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ঢাকা কোর্ট আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম প্রমুখ।