চমেক হাসপাতালে গণশুনানি

ইনজেকশন পুশ করেন সুইপার!

প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গণশুনানিতে বক্তৃতা করেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম -যাযাদি
যাযাদি ডেস্ক কাজ করেন সুইপারের। পাশাপাশি নিজেই রোগীকে পুশ করেন ইনজেকশন। প্রয়োজনে অন্যান্য সেবাও দেন তিনি। তবে মহিউদ্দিন নামের ওই যুবককে নার্স কিংবা চিকিৎসকের কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সুইপার হিসেবে কাজ করেন তিনি। তবুও কর্তৃপক্ষের জ্ঞাত অথবা অজ্ঞাতসারে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা দেন মহিউদ্দিন। বিনিময়ে আদায় করেন বাড়তি টাকা। বুধবার সকালে হাসপাতালে গণশুনানিতে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে রোগীকে ইনজেকশন পুশ করার অভিযোগ তোলেন কোহিনুর আকতার নামে এক স্বজন। কোহিনুর আকতার বলেন, 'শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগে আমার মা শাকেরা বেগমকে ভর্তি করাই। ভর্তির দিন মহিউদ্দিনকে ওয়ার্ডের মেঝে পরিষ্কার করতে দেখেছি। এরপর সোমবার দুপুরে তিনি আমার মায়ের হাতে ইনজেকশন পুশ করেন। এতে আমার মায়ের হাত ফুলে যায়।' কক্সবাজারের পেকুয়ার বাসিন্দা ওয়াহিদুল ইসলাম এক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনকে মারধরের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ছয় নম্বর ওয়ার্ডে ওষুধ দিতে গেলে গেটম্যানের দায়িত্ব পালনকারী আনসার সদস্য টাকা ছাড়া প্রবেশ করতে দেয় না। টাকা না দেয়াতে খারাপ ব্যবহার করে। পরে কয়েকজন আনসার সদস্য তাকে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন। গণশুনানিতে ফেনীর সোনাগাজীর বাসিন্দা হেদায়েতুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হাসপাতালের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের গেটম্যান টাকা ছাড়া প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে টাকা দিলে ঢুকতে দেয়। শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মচারী হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অবাধে যাতায়াত বন্ধের দাবি জানান। চকবাজার কাতালগঞ্জের বাসিন্দা মো. শহিদুলস্নাহ বলেন, খাদ্য বিভাগে কর্মরত মো. আইয়ুব ও মো. মিজান হাসপাতাল থেকে চুরি করে মাছ-মাংস বাসায় নিয়ে যায়। গণশুনানিতে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজল কান্তি দাশ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. শাহজাহান, হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া, সেবা তত্ত্বাবধায়ক শিপ্রা চৌধুরী, ওয়ার্ড মাস্টার রাজীব কুমার দে ও আনসার কমান্ডার মো. আবুল কাসেম উপস্থিত ছিলেন। উপপরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগগুলো নেয়া হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এদিকে শুনানিতে অভিযুক্ত দুজনকে চাকরিচু্যত করা হয়েছে বলে জানান ওয়ার্ড মাস্টার রাজীব কুমার দে। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দুজনকে চাকরিচু্যত করা হয়েছে।