দু-তিনজন নকশি শ্রমিক মাসে পান হাজার টাকা

এসএমআই মেলা

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
\হ নকশিকাঁথার দোকানে এক দম্পতি। সুজুনি কাঁথার দাম জানতে চাইলেন তারা। দোকানি দাম হাঁকান এক হাজার ৩০০ টাকা। দম্পতি ৯০০ টাকা দিতে রাজি হন। বনিবনা না হওয়ায় বিদায় নেন দম্পতি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য মেলার পায়েল নকশি স্টলে শুক্রবার এ দৃশ্য দেখা যায়। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ মেলা চলছে। চাপাইনবাবগঞ্জের পায়েল নকশি স্টলের বিক্রেতা ওরমিতা দাশ বলেন, 'এক হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের সুজুনিকাঁথা তৈরি করতে একজন শ্রমিককে ২০ দিন থেকে এক মাস সময় দিতে হয়েছে। এ জন্য শ্রমিককে দিতে হয়েছে ৫০০ টাকা। সেই কাঁথা ঢাকায় এনে কীভাবে ৯০০ টাকায় বিক্রি করি? ওরমিতা দাশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুজুনি কাঁথায় কাজ তুলনামূলক কম। কিছু নকশিকাঁথা আছে, সেগুলোর কাজ অনেক বেশি। সেগুলো তৈরি করতে দুই থেকে তিন মাস লেগে যায় একজন শ্রমিকের। সেগুলো সাধারণত দুই হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বিনিময়ে শ্রমিকরা পান দেড় হাজার টাকার মতো। এত সময় ব্যয় করে এত কম মজুরিতে মানুষজন কাঁথা তৈরি করে? উত্তরে ওরমিতা দাশ জানান, গ্রামের নারীরা কম মূল্যেই কাজ করে। সুতা আর কাপড় দিলে তারা এ মূল্যেই কাজ করে দেন। চাপাইনবাবগঞ্জ সদরের পাঠানপাড়া গ্রামে প্রায় ২০০ নারী নকশিকাঁথা তৈরির কাজে নিয়োজিত। নকশিকাঁথার জন্য প্রখ্যাত জামালপুর জেলাও। জামালপুর থেকে আসা মোহনা হস্তশিল্প এসএমই মেলায় একটি স্টল দিয়েছে। জেলা সদরে রয়েছে তাদের একটি দোকান ও একটি কারখানা। মোহনা হস্তশিল্পের কর্ণধার অনিক হাসান জানান, তারা একেকটা নকশিকাঁথা খুচরা সাত থেকে নয় হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এ ধরনের নকশিকাঁথা তৈরি করতে দুই থেকে তিনজন শ্রমিককে ন্যূনতম এক মাস কাজ করতে হয়। বিনিময়ে শ্রমিককে দেন এক হাজার টাকা। সেই টাকা শ্রমিকরা ভাগাভাগি করে নেন। নকশিকাঁথায় কাজ বেশি হলে এর দামও বেড়ে যায়। কাজের ভিত্তিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকের মজুরিও হয় দেড় থেকে দুই হাজারের অধিক বলেও জানান অনিক। এ মজুরিতেও শ্রমিকের অভাব হয় না বলে জানান অনিক। তিনি বলেন, 'আমাদের এলাকায় কর্মসংস্থান কম। তাই শ্রমিক পাওয়া নিয়ে সমস্যা হয় না। তবে আমরা যদি নকশিকাঁথা আরও বেশি দামে বিক্রি করতে পারি তাহলে শ্রমিকদেরও বেতন বেশি দিতে পারব। এ জন্য নকশিকাঁথা বিদেশে রফতানি হওয়া দরকার। বিদেশে রফতানি হলে দামও বেশি পাওয়া যাবে, শ্রমিকদের মুজরিও বেশি দেয়া যাবে।