গণপূর্তমন্ত্রীর আশা

দেশে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি বেশি দিন থাকবে না

গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, 'এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজের বিত্ত-বৈভবের রাজনীতি দেখি। এটা তো রাজনীতি হওয়ার কথা ছিল না। রাজনীতি বলতে আমি শ্রেষ্ঠ নীতিকে বুঝি।'

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
যারা বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে বাধা, দেশের উন্নয়নে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দেয়, রাজনীতির নামে পেট্রলবোমা দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারে, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়, মানুষের গণতান্ত্রিক চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে, তাদের রাজনীতি বাংলাদেশে বেশি দিন থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 'বাংলাদেশ কংগ্রেস' দলের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, 'রাজনীতির ব্রত হতে হবে আত্মউৎসর্গের। এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজের বিত্ত-বৈভবের রাজনীতি দেখি। এটা তো রাজনীতি হওয়ার কথা ছিল না। রাজনীতি বলতে আমি শ্রেষ্ঠ নীতিকে বুঝি, রাজনীতি মানে রাজার নীতিতে আমি বিশ্বাস করি না।' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, 'শেখ হাসিনার রাজনীতি তৃণমূল থেকে শুরু করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, অসহায় ছিন্নমূল মানুষ থেকে ঊর্ধ্বমুখী সবার জন্য সম-অধিকার নিশ্চিত করার রাজনীতি। সে লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করছেন। তাই যে বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি, সেই বাংলাদেশকে আজ বলা হয় উন্নয়নের রোল মডেল।' সরকারের সফলতার বিষয়ে তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু নির্মাণে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা তার দৃপ্ত প্রত্যয়ে বলেছিলেন, 'নিজের দেশের টাকায় পদ্মা সেতু বিনির্মাণ করব।' অনেকেই এ নিয়ে হাসি-তামাশা করেছেন, অথচ সেই পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার যা কেউ সাহস পায়নি, সেই কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের আজ যে প্রান্তে যাবেন, সেখানেই দেখবেন উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। ইন্টারনেটের ফলে মানুষ সর্বত্র উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন। আমাদের মাথাপিছু গড় আয়, আয়ু, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বেড়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আমরা চাই।' 'একশ'র ঊর্ধ্বে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন। তারা যতবার কথা বলতে চেয়েছেন, ততবার তিনি তাদের কথা শুনেছেন। এটাই হলো রাজনীতির সৌন্দর্য্য যে, পরমতসহিষ্ণুষ্ণ হতে হবে। সবার কথা শুনতে হবে, না হলে গণতন্ত্র অর্থবহ হয় না, অর্থহীন হয়ে যায়।' মন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে বাধা, দেশের উন্নয়নে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দেয়, রাজনীতির নামে পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়, মানুষকে পথে হাঁটায় বাধার সৃষ্টি করে, সেই রাজনীতি বাংলাদেশে বেশি দিন থাকবে না। সে জন্য আমরা তাদের বলতে চাই আপনারা অন্ধকার ও ভুল পথ থেকে ফিরে আসেন, নইলে একটা সময় দেখা যাবে, মুসলিম লীগের মতো আপনাদের অস্তিত্ব মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে।' জীবনকে উৎসর্গ করতে হবে মানুষের কল্যাণে ও দেশের সেবায়। আর সেটাই হবে রাজনীতি। এসব মন্তব্য করে শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, 'আমরা চাই যারা ধ্বংসের রাজনীতি করে, যারা সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে, স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতি করে, তাদের বিনাশ হোক। আমরা সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতি দেখতে চাই। যেখানে ক্ষমতায় থাকবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল, আবার বিরোধী দলেও থাকবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল। স্বাধীনতাবিরোধীরা থাকবে তা আমরা কল্পনাও করি না।' বাংলাদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল আউয়াল, মো. জিয়াউর রহমান জিয়াসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা।