নাশকতার হুমকি নেই

বৈশাখের অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তা জোরদার

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, 'যদিও কোনো ধরনের নাশকতার হুমকি নেই বা আশঙ্কাও করছি না, তবুও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আনন্দময় করতে নগরবাসীসহ দেশব্যাপী নাগরিকদের নিরাপত্তায় পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি। ছবিটি মঙ্গলবার বিকালে তোলা -ফোকাস বাংলা
দরজায় কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। আর মাত্র পাঁচদিন পর রাজধানীসহ সারাদেশের লাখ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি বরণ করে নিতে উৎসবে মেতে উঠবে। দিবসটি উপলক্ষে ছায়ানটসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রাজধানীসহ সারাদেশে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বৈশাখের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল নামবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। ওইদিন লাখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসিটিভি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর মাধ্যমে ওইদিন মানুষের গতিবিধি মনিটর করা হবে। শুধু সিসিটিভিই নয়, পুলিশ, ডিবি ওর্ যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদারে নিয়োজিত থাকবেন। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের অদূরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশদ্বারের সামনে দেখা গেছে পুলিশের একাধিক সদস্য সিসিটিভির ক্যাবল স্থাপনে কাজে ব্যস্ত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, পহেলা বৈশাখের কাকডাকা ভোর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল নামে। বিশেষ করে রমনার বটমূল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভিড় বেশি হয়। এ দুটি উদ্যানের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে একাধিক সিসিটিভি স্থাপিত হচ্ছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে বৈশাখ উপলক্ষে রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেল থেকে শুরু করে ছোটখাটো হোটেল, রেস্তোরাঁ, বৃহৎ শপিংমলের রেস্তোরাঁয় বৈশাখী অফার চলছে। বাংলা নববর্ষের দিন জানমালের নিরাপত্তায় সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো হচ্ছে- রমনার বটমূল এলাকা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, কূটনৈতিক এলাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, টিএসসি এলাকাসহ দেশব্যাপী বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোয় ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া বর্ষবরণ এলাকাগুলোতে সুপেয় পানি সরবরাহ করা, গাড়ি পার্কিং, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও ময়লা-আবর্জনা ফেলতে ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন রাখা হবে। তাৎক্ষণিক কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রম্নত হাসপাতালে নিতে প্রস্তুত থাকবে অ্যাম্বুলেন্স। ইভটিজিং বন্ধে থাকবে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। সেই সঙ্গে পুলিশ ওর্ যাবের কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলা নতুন বর্ষবরণ উপলক্ষে দেশের জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকায় অনুষ্ঠিতব্য বৈশাখী মেলা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক উৎসবসহ নানা ধরনের প্রদর্শনীতে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন বিভাগীয় কমিশনার, দেশের সব মেট্রোপলিটন পুলিশ, সব বিভাগের পুলিশের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, 'যদিও কোনো ধরনের নাশকতার হুমকি নেই বা আশঙ্কাও করছি না, তবুও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আনন্দময় করতে নগরবাসীসহ দেশব্যাপী নাগরিকদের নিরাপত্তায় পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি ও সংস্থা এ লক্ষে কাজ করছে। সরকার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাজধানীসহ দেশব্যাপী পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।'