সংবাদ সম্মেলনে পূর্তমন্ত্রী

বিজিএমইএ ভবন ভাঙার ঠিকাদার নিয়োগ ২৫ এপ্রিল

গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, মঙ্গলবার ভবনটি ভাঙার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে ভবনটিকে তারা দখলে নিয়েছেন, ভবনে অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন।

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কার্যাদেশ দেওয়া হবে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিন মাসের মধ্যে ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরানো হবে জানিয়ে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজিএমইএ ভবন ভাঙা হবে। তবে কী পদ্ধতিতে ভবনটি ভাঙা হবে, তা চূড়ান্ত করা হবে ২৫ এপ্রিল। রেজাউল করিম বলেন, 'ভবনটি ভাঙতে এর মধ্যে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। ২৪ এপ্রিলের মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে। ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বাছাই করা হবে ঠিকাদার। উপযুক্ত দেশীয় প্রতিষ্ঠান না পেলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকেই ভবনটি ভাঙার দায়িত্ব দেওয়া হবে।' সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়ে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, 'মঙ্গলবার ভবনটি ভাঙার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে ভবনটিকে আমাদের দখলে নিয়েছি, ভবনে অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছি।' রাজধানীর হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তবে পুরো ভবনটি কখন, কীভাবে ভাঙা হবে- এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বিজিএমইএ ভবনে যান রাজউকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার অলিউর রহমান জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিজিএমইএ ভবনে এসেছেন তারা। ভবনটিতে এখনো দু-একটি অফিস রয়েছে। তাদের মালামাল দ্রম্নত সরিয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এরপর বিদু্যৎ ও গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য লোক ডাকা হয়েছে। এর আগে রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরো ভবন ভেঙে ফেলা হবে। তবে কবে, কখন এই ভবন ভেঙে ফেলা হবে, সে বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যানও নিশ্চিত করেননি। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটিকে 'হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো' উলেস্নখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হলো। পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। প্রথমে ছয় মাস এবং পরে সাত মাস সময়ও পায় তারা। সর্বশেষ গত বছর নতুন করে এক বছর সময় পায় সংগঠনটি। সে সময় তারা মুচলেকা দেয়, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না। কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটি দুটি বেসমেন্টসহ ১৬ তলা। বিজিএমইএ ব্যবহার করে চারটি তলা। বাকি জায়গা দুটি ব্যাংকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। ভবনের ওপরের দুটি তলা নিয়ে বিলাসবহুল 'অ্যাপারেল ক্লাব' করা হয়েছে। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার, রেস্তোরাঁ ও সভাকক্ষ রয়েছে। বড় আকারের একটি মিলনায়তনও আছে।