একাদশ সংসদ নির্বাচন

আওয়ামী লীগের ভোটের ব্যয় আগের চেয়ে কম

এবার আওয়ামী লীগ তিন হাজার ৬২৮টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল। প্রতিটি ফরমের দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ মনোনয়ন ফরম বিক্রি থেকে ১০ কোটি ৮৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার তহবিল গড়েছে দলটি।

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অর্ধেকের বেশি আসনে দলীয় প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যত ব্যয় হয়েছিল, এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে তাদের ব্যয় হয়েছে তার চেয়ে দেড় কোটি টাকা কম। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় ব্যয়ের হিসাব রোববার নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন ভবনে গিয়ে সিইসি কে এম নূরুল হুদার কাছে এই হিসাব জমা দিয়ে আসেন। কত টাকা ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন-সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইমাম বলেন, 'এটি এখন নির্বাচন কমিশনের সম্পত্তি। এটা পাবলিক ডকুমেন্ট তাদের কাছ থেকে পেয়ে যাবেন।' তবে প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য বলেন, '১ কোটি ৫ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয়ের ফর্দ দেখানো হয়েছে।' বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় ব্যয় ছিল ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ওই নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকায় ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যয় ছিল ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ টাকা। ওই নির্বাচনে জয়ের পর টানা ক্ষমতাসীন দলটি। খরচের হিসাব না জানালেও ব্যয় এবার কম হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, '২০০৮ থেকে ২০১৪ সালে নির্বাচনী ব্যয় কিছুটা বেড়েছিল, এবার কমেছে।' 'অন্যান্য বছর দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এবার সেটি করা হয়নি। সেদিক থেকে আমাদের ব্যয় কম। আবার এবারে আমরা আয় পেয়েছি বেশি, অনেকেই অনুদান দিয়েছেন।' বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া থেকে শুরু করে প্রচার, সব কিছুতেই ছিল জমকালোভাব। এবার আওয়ামী লীগ তিন হাজার ৬২৮টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল। প্রতিটি ফরমের দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ মনোনয়ন ফরম বিক্রি থেকে ১০ কোটি ৮৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার তহবিল গড়েছে দলটি। আইন অনুযায়ী, ভোটের ব্যয়ের পাশাপাশি নিবন্ধিত প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের খতিয়ানও জমা দিতে হয় ইসিতে। গত বছর দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দলটির আয় ছিল ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা, আর ব্যয় ছিল ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা। ভোটের বছরে দলটির তহবিল আরও বেড়েছে। জুলাইয়ে তারা বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব ইসিতে জমা দেবে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ২৬০ জন প্রার্থী ছিল। প্রার্থীদেরও তাদের নির্বাচনী ব্যয় ইসিতে জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এইচ টি ইমাম বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ইতোমধ্যে নিজ নিজ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেছেন। ইসিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ ও দীপু মনি এবং এ বি এম রিয়াজুল কবির কাউছার, আনোয়ার হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু, সেলিম মাহমুদ ও দীপক দত্ত। আওয়ামী লীগের ব্যয়ের হিসাব নেয়ার সময় সিইসির সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম। একাদশ সংসদে অংশ নেয়া অধিকাংশ দল এখনো ইসিকে ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি।