ওয়াসার পানির মানের প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ওয়াসার নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষাকৃত পানির মানের প্রতিবেদন জনসমক্ষে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) সমমনা বিভিন্ন সংগঠন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান। বক্তারা বলেন, 'রাজধানীতে সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। বছরের অধিকাংশ সময়ই এ সংকট থাকলেও গরমকালে সেটি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। গ্রাহকদের অভিযোগ, ওয়াসার পানি মারাত্মক দুর্গন্ধযুক্ত, ঘোলাটে ও ময়লায় ভরা। এমন পানি না ফুটিয়ে পান করা সম্পূর্ণ অনিরাপদ হওয়ায় তারা পানি ফুটিয়ে পান করছেন।' দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) একটি গবেষণা প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে বক্তারা বলেন, '৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন। বাসাবাড়িতে এই পানি ফোটাতে বছরে ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩৭ হাজার ঘনমিটার গ্যাস পোড়াতে হয়। এতে আম জনতার খরচ হয় ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ওয়াসা কর্তৃক সরবরাহকৃত পানির গুণগত মানের সমালোচনা তুঙ্গে।' বক্তারা বলেন, 'ঢাকা মহানগরীর মানুষকে মানসম্মত পানি সরবরাহ করার জন্য বিগত বছরগুলোতে ওয়াসা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। ওয়াসার পানির গুণগত মান নিয়মিতভাবে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে পরীক্ষা করার জন্য ওয়াসার নিজস্ব ল্যাবরেটরি মোহাম্মদপুরের আসাদ গেটে চালু আছে। এই ল্যাব ব্যবস্থাপনায় মোটা অঙ্কের টাকা খরচ হয়। কিন্তু ওয়াসার পানির গুণগত মান মনিটরিং ব্যবস্থা কতটুকু কার্যকর, তা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ও মানুষের ক্ষোভ থেকেই উপলব্ধি করা যায়।' বক্তাদের অভিযোগ, শতভাগ পরিশোধন না করেই নগরবাসীকে দূষিত পানি খাওয়াচ্ছে ওয়াসা। যার ফলে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ময়লাসহ দুর্গন্ধযুক্ত পানি খাচ্ছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, পেটের পীড়াসহ নানা ধরনের জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব হয় দুর্গন্ধযুক্ত এ সকল অনিরাপদ পানি থেকেই। ওয়াসা শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ ভূগর্ভস্থ এবং বাকি ২০ ভাগ ভূ-উপরস্থ পানি সংগ্রহ করে এবং তা পরিশোধনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করে। ভূগর্ভস্থ পানি খুবই সুপেয়। তাই সাধারণভাবে ধারণা করাই যায়, ওয়াসার পানি খুবই ভালো। কিন্তু সার্বিক অব্যবস্থাপনা ও বিশুদ্ধতার মান মনিটরিংয়ের অভাবে ওয়াসা কর্তৃক সরবরাহকৃত পানির গুণগত মান এত নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা একেবারেই পান করার মতো নয়। পানির মান মনিটরিং ব্যবস্থা কার্যকর করার অন্যতম প্রাথমিক ধাপ ওয়াসার নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষাকৃত ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা। সেই সঙ্গে সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বিজ্ঞান ও গবেষণাগার, বুয়েট, আইসিডিডিআর'বিসহ অন্যান্য ল্যাবে পরীক্ষা করা এবং ভবিষ্যতে নিয়মিতভাবে তা প্রকাশ করা। তবে বক্তাদের দাবি, এসবের কিছুই করছে না ওয়াসা। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলনের (বানিপা) সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, বিসিএইচআরডির নির্বাহী মাহবুব হক, পবার অর্গানাইজার শরিফুজ্জামান খান সাঈদ প্রমুখ।