ঈদের আগে সক্রিয় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অজ্ঞানপার্টির ৬২ জন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ -যাযাদি
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা। তাদের অন্যতম টার্গেট বিভিন্ন শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট ও রেলস্টেশন এলাকায় আগত ব্যক্তিরা। প্রথমে টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা স্থাপন এবং একপর্যায়ে চেতনানাশক ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্যের আমন্ত্রণ জানানো। ওই ব্যক্তি রাজি হয়ে খাবার নিলেই মিশন সম্পন্ন হয় অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের। খাবার খেয়ে ওই ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়েন আর মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যান চক্রের সদস্যরা। চা-পান, জুসসহ বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়া এই চক্রের ৬২ জন সদস্যকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা। শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর নিউমার্কেট, গুলিস্থান, জয়কালীমন্দির, ফকিরাপুল, কুড়িল বিশ্বরোড, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪৩ পিস নকটি, নিটরাজিপাম, ১৮ পিস লেক্সোটানিল, ২৮ পিস ইপিত্রা, ১০ পিস সেডিল, রিভোট্রিল পিস-২, ডিজোপেন, ক্লোনাজিপাম, নিক্স, রাবিং বামের নীল রংয়ের কৌটা, ওষুধ মিশ্রিত জুস, খেজুর, সাতটি চোরাই মোবাইল ফোন ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, অজ্ঞান করার পর সবকিছু কেড়ে নিয়েই ক্ষ্যান্ত থাকে না চক্রের সদস্যরা। কখনো ভিকটিমের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া মোবাইল ফোন থেকে স্বজনদের কাছে ফোন করে মুক্তিপণও দাবি করে। আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে তারা রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট, রেলস্টেশন এলাকায় আগত ব্যক্তিদের টার্গেট করে সখ্যতা স্থাপন করে। এরপর তাদের অপর সদস্যরা ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়। টার্গেট করা ব্যক্তি রাজি হলে ট্যাবলেট মিশ্রিত সেই খাদ্যদ্রব্য তাকে খাওয়ানো হয়। খাদ্য গ্রহণের পর অচেতন হলে তার মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে দ্রম্নত চলে যায়। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ ক্ষেত্রে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চা, কফি, জুস, ডাবের পানি, পান, ক্রিম জাতীয় বিস্কুট ব্যবহার করে থাকে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে অজ্ঞানপার্টি সদস্যদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য না থাকায় তারা আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে পুনরায় একই কাজ শুরু করে। কারণ, তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করলেও পুলিশকে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করতে হয়। সে ক্ষেত্রে মামলার ধারাগুলো দুর্বল হয়ে যায়। যদি ভুক্তভোগীদের কেউ বাদী হয়ে যদি কেউ মামলা করতেন, তবে এটি শক্ত হতো।