ফুটপাত দখল

টেম্পো স্ট্যান্ড আর বালিশ-মাদুরে নষ্ট হচ্ছে ঢামেকের পরিবেশ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দু'দিকের প্রবেশদ্বার সংলগ্ন ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় রোগী ও স্বজনদের হাঁটতে হচ্ছে মূল রাস্তায়। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রবেশের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় এভাবেই সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে হিউম্যান হলার গাড়ি (টেম্পো)। ছবিটি মঙ্গলবার তোলা -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ সরকারি হাসপাতালে প্রবেশের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি হিউম্যান হলার গাড়ি (টেম্পো)। সিরিয়ালে সামনে থাকা গাড়ির পেছনে পাদানিতে দাঁড়িয়ে আনুমানিক দশ/এগার বছর বয়সী টেম্পোর হেলপার সজোরে শনিরআখড়া, শনিরআখড়া, যাবেন নাকি শনিরআখড়া বলে যাত্রী ডেকে চলছে। রাস্তায় বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে টেম্পো দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে বাস, মোটরসাইকেল ও রিকশার যানজট তৈরি হয়েছে। টেম্পুর সামনে সরিয়ে নিতে বাস থেকে ভেঁপু বাজাচ্ছে বাসচালক। ব্যস্ততম সড়কের পাশে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন বিশিষ্ট এ হাসপাতালের সামনে অস্থায়ী টেম্পো স্ট্যান্ড গড়ে ওঠার পাশাপাশি দু'দিকের প্রবেশদ্বার সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে মাদুর, বালিশ, চাদর, বদনা, ফলমূল ও পান সিগারেটের অস্থায়ী দোকান। ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় রোগী ও তাদের স্বজনদের হাঁটতে হচ্ছে রাস্তায়। ফলে যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সোমবার সকাল ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২ এর সামনের রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখা যায়। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে ব্যস্ততম হাসপাতালের সামনে রাস্তায় এ ধরনের অস্থায়ী টেম্পু স্ট্যান্ড ও অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে দোকান স্থাপনে পরিবেশ দূষণের কথা কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু দেশের অন্যতম বৃহৎ সরকারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চৌহদ্দিতে এমন দৃশ্য প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে। রাজধানীর পলাশী থেকে চানখাঁরপুলের সামনে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়রের নামে স্থাপিত হানিফ ফ্লাইওভারের উপরের রাস্তা দিয়ে যাত্রাবাড়ী এবং নিচে সোজা বঙ্গবাজার চলে গেছে। অবস্থানগত কারণেই চানখাঁরপুলের এ রাস্তাটি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করে। এলাকায় স্থাপিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২ এর অবস্থান। সারাদিন অসংখ্য যানবাহন চলাচলের ফলে যানবাহনের ধোঁয়া ও রাস্তার বালিতে প্রতিনিয়ত বায়ু দূষিত হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালে প্রবেশের সামনের ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসায় শুধুমাত্র হাসপাতালে সৌন্দর্য নষ্ট নয়, ফল-ফলাদিসহ বিভিন্ন পণ্যের আবর্জনায় নষ্ট করা হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢামেক হাসপাতালে এক শ্রেণির কর্মচারী নেতারা পুলিশকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে হাসপাতালের সামনে পরিবেশ বিনষ্ট করে অস্থায়ী টেম্পো স্ট্যান্ড স্থাপন ও ফুটপাত দখল করে দোকানপাট বসিয়েছেন। রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সোহরাব আলম এ প্রতিবেদন সঙ্গে আলাপকালে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কিছুদিন আগে তিনি একজন কিডনি ফেইলিউর রোগী দেখতে গাড়ি নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। হাসপাতালে প্রবেশ গেটের দু'পাশে ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাটের সামনে রোগী ও তাদের স্বজনরা দাঁড়িয়ে থাকায় গাড়ি নিয়ে যেতে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ এ সরকারি হাসপাতালের সামনে থেকে সকল প্রকার দোকান উচ্ছেদ করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। হাসপাতালের সামনে অবৈধ দোকানপাট ও টেম্পো স্ট্যান্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক আব্দুর রহিম বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষীরা কিছুদিন পরপর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে কিন্তু ভাসমান হকাররা কয়েকদিন পর আবার ফিরে আসে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২ হাজার ৬০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও গড়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার রোগী থাকছে। তাদের সাথে ২/৩ জন করে এটেনডেন্ট থাকলেও প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। মূলত এ মানুষগুলোকে ঘিরে হাসপাতালের আশেপাশে ভাসমান বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে উঠেছে। তবে ঢামেক হাসপাতাল ২ এর সামনে টেম্পো স্ট্যান্ড থাকার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান।