গ্রেপ্তার ৩

ছিনতাইয়ের জন্য গায়ে পড়ে ঝগড়া, তারপর হত্যা

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সাকিব হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরখানের বাটুলিয়া এলাকা থেকে তিন যুবককে আটক করের্ যাব -যাযাদি
রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় সাকিব হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছের্ যাব-১। সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উত্তরখানের বাটুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, শাহীন মিয়া ওরফে বস্ন্যাক শাহীন (২৪), মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মিজু (২৪) এবং ফরহাদ হোসেন (২৬)। ওই হত্যাকান্ডের পর উত্তরখানের বাটুলিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে ছিলেন তারা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছের্ যাব। পরে আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরখানের আটিপাড়ার কাঠালতলা এলাকা থেকে সাকিব হত্যায় ব্যবহৃত একটি ধারালো ছোরা, তিনটি মোবাইল ফোন সেট জব্দ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব বলে, ছিনতাইয়ের জন্য সাকিব ও রুবেলের ওপর হামলা চালানো হয় বলে র?্যাবকে জানিয়েছে শাহীন। গত ১৫ জুন বিকেলে উত্তরখান এলাকায় নদীর পাড়ে বেড়াতে গিয়ে খুন হন সাকিব। ওই ঘটনায় তার বন্ধু শিপন গুরুতর আহত হন। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র?্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র?্যাব-১ এর অধিনায়ক লে কর্নেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে শাহীন, মিজু ও ফরহাদ। র্ যাব সূত্রে জানা যায়, ছোট থাকতেই মাকে হারান মো. সাকিব হোসেন। ২০ বছর বয়সী এই যুবকের বাবা মো. রফিকুল ইসলাম এক সময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। তবে বার্ধক্য ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখন তিনি বেকার। অভাবের কারণে এসএসসির পর পড়াশোনা বন্ধ করে দেন সাকিব। সংসারের হাল ধরতে কাজ নেন উত্তরার ৭নং সেক্টরে 'ফড়িং' নামে একটি পোশাক বিক্রির শোরুমে। গত ১৫ জুন বিকেলে বন্ধু শিপন মিয়াকে নিয়ে উত্তরখান এলাকায় নদীর পাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ সময় ৭/৮ জন যুবক তাদের ঘিরে ধরে। দুজনের বুকে ও পিঠে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে মোবাইল ফোন সেট ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাকিব। শিপন এখনো চিকিৎসাধীন তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ছিনতাইয়ের জন্য সাকিব ও রুবেলের ওপর হামলা চালানো হয় বলে র?্যাবকে জানিয়েছে শাহীন। এই যুবক ২০১৫ সালে টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যা নিকেতন থেকে এসএসসি পাস করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করে আসছেন। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। শাহীনের বিরুদ্ধে উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানায় ছিনতাই, মারামারি ও মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। হত্যাকান্ডের দিন ঘটনাস্থলে গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করছিলেন শাহীন, জিয়া, তানভীর, রুবেল, মিঠু, সবুজসহ ৭-৮ জন। এ সময় সাকিব ও শিপনকে দেখতে পায় মিঠু। এরপর ছিনতাইয়ের উদ্দেশে সবাইকে নিয়ে সাকিব ও শিপনের সঙ্গে গায়ে পড়ে ঝগড়া শুরু করেন তারা। বাগ্‌?বিতন্ডার একপর্যায়ে সাকিব ও শিপনের কাছ থেকে মোবাইল সেট ও টাকা ছিনিয়ে নিতে চান। তারা বাধা দিলে দুই পক্ষের হাতাহাতি হয়। এ সময় রুবেলের কাছ থেকে একটি সুইচ গিয়ার ছুরি নিয়ে সাকিব ও শিপনকে আঘাত করে পালিয়ে যান শাহীন। র?্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, সাকিবের আয়ে তার পুরো পরিবার চলত। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার বাবা এখন শোকে হতবিহবল।