ওভারব্রিজ দিয়ে মিনিটে চলাচল করেন সাড়ে ৫ জন

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮, ২২:৪৭

যাযাদি রিপোটর্
বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের পাশের ওভারব্রিজের নিচে অবৈধ চায়ের দোকান। ছবিটি রোববার তোলা Ñযাযাদি
ব্রিজে উঠতে প্রথমে বাধার মুখে পড়তে হলো চায়ের দোকানে চা-পানকারীদের। ওভারব্রিজের ঠিক নিচে পূবর্-পশ্চিমের দুটি সিঁড়ির মাঝখানের এই দোকান, এতে তিনজন কমর্চারী কাজ করছিলেন। ফলে লোকজন এমনভাবে দঁাড়িয়ে আছেন যে, সিঁড়িতে ওঠা যাচ্ছিল না। শনিবার সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের পাশের ওভারব্রিজে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেছে। স্থানীয় দোকানদার ও পথচারীরা বলছেন, ব্রিজের দুই পাশেই চায়ের দোকান রয়েছে। উত্তর গেট থেকে লোকজনের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হচ্ছে। এক্সকিউজমি সাইড প্লিজ বলায়, দুইজন লোক সামান্য একটু সরে দঁাড়ালেন। এরপর কোনো রকম পা ঢুকিয়ে, ধাক্কা-ধাক্কি করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠেই দেখা গেল, পুরো ওভারব্রিজটি ছেয়ে রয়েছে ‘ড্যান্ডি’র কাগজ, বিড়ি-সিগারেটের টুকরা, ডাবের অবশিষ্ট অংশ আর প্লাস্টিকের বোতলে। পথচারীদের রাস্তার মাঝে ঘুমাচ্ছে পথশিশুরা। ব্রিজটির উত্তর দিকে ময়লা আর দুগর্ন্ধ। অন্যদিকে পুরো পথশিশুরা দল বেঁধে ড্যান্ডি সেবন (নেশা) করছে। তারা বলেন, দিনরাত বলে কিছু নেই, সব সময় এই ব্রিজটি অপরিষ্কার থাকে। এই রাস্তাটি মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে নিরাপত্তাহীনতার কারণে নারী ও শিশুরা ওভারব্রিজ দিয়ে পারাপার হন না। সপরিবারে ওভারব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় আহমদ উল্লাহ বলেন, নিচের রাস্তা দিয়ে পারাপার ঝুঁকিপূণর্ ও বেআইনি। তাই কষ্ট করে ওভারব্রিজ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ওভারব্রিজে উঠতে গিয়ে প্রথমে মানুষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতে হয়, এটা খুবই খারাপ লাগে। ছোট ভাইকে নিয়ে ফকিরাপুল খালা-বাড়ি যাচ্ছেন মহিউদ্দিন রিপন। তিনি বলেন, বাড়ির সামনে থেকে গাড়িতে উঠে পল্টন নেমেছেন। ছোট ভাইকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ দেখিয়েছেন। রাস্তার দৃশ্য দেখার জন্য ওভারব্রিজে উঠেছেন। কিন্তু এখানে দঁাড়িয়ে থাকা দায়। এতো বড় মসজিদের পাশের ওভারব্রিজ দিয়ে মানুষ চলাচলা ক?রার মতো অবস্থা নেই। নাম প্রকাশ না করে ব্রিজের নিচের একটি চায়ের দোকানের কমর্চারী বলেন, গত পঁাচ বছর ধরে এই দোকানে কাজ করেন তিনি। দোকানটির মালিক আবদুর রহমান। তার এই দোকানে মোট সাতজন কমর্চারী তিন শিফটে কাজ করেন। একটু হিসাব করে দেখা গেল, সকাল ১০-০৫ থেকে ১০-৩৫ পযর্ন্ত আধঘণ্টায় ওভারব্রিজ দিয়ে মাত্র ১৬৫ জন রাস্তা পার হয়েছেন। এর মানে প্রতি মিনিটে মাত্র ছয়জনেরও কম ওভারব্রিজটি ব্যবহার করছেন। আর দুইজন শিশুসহ মোট ২২ জন ওভারব্রিজটি দেখতে ও বিশ্রাম নিতে এসেছেন। যারা এই ওভারব্রিজ দিয়ে পারাপার হয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই মুখে কাপড় দিয়ে নাক চেপে যেতে দেখা গেছে। অথচ একই সময় ব্রিজটির ঠিক পশ্চিমে রাস্তার ওপর থাকা লোহার বেরিকেড ভেঙে যাওয়া জায়গা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক হাজার ২৩৩ জন রাস্তা পার হয়েছেন।