আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা

ইতিহাসে নারীর অবদান অনস্বীকার্য

জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। এই অঞ্চলের রাজনীতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সংস্কৃতিতে নারীর অবদান অনেক। অনেক নারী ইতিহাস আলোচনায় আসেনি। তাদের অবদানকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।'

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী -যাযাদি
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ ইতিহাসে নারীদের অবদান অনন্য। নারীরা একদিকে যেমন সংসার সামলেছেন তেমনি শিক্ষা ও দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। নারীদের অবদানকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। ইতিহাসে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ আয়োজিত ৪৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক ইতিহাস সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে 'ইতিহাসে নারী, দক্ষিণ এশিয়া প্রসঙ্গ'। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস। আর এই ইতিহাসে নারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর অবদান খুঁজে পাই। একজন নারী, একজন মা। আর মায়ের কাছেই সন্তান মূল্যবোধ ও নৈতিকতার শিক্ষা পায়। ইতিহাসেও নারীর অবদান অনস্বীকার্য। স্পিকার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। এই অঞ্চলের রাজনীতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সংস্কৃতিতে নারীর অবদান অনেক। অনেক নারী ইতিহাস আলোচনায় আসেনি। তাদের অবদানকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসেও নারীর অবদান সমুজ্জ্বল ও অনন্য। নারী শ্রমিকেরা এখন জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। কৃষিতে অবদান রাখছে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, সরকার নারীশিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। নারীরা এখন সব ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। আমাদের দেশের নারীরা জ্ঞান ও বিজ্ঞান চর্চায় উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। কৃষিতে প্রায় ৬০ ভাগ অবদান নারীদের। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীরা যুদ্ধ করেছে আবার পেছন থেকে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করেছে, খাবার দিয়েছে। বিচারালয়ে নারীরা, এভারেস্টের চূড়ায় উঠছে নারীরা। বাজেটে নারীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, নারীরা ইতিহাসের অংশ। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম নিজে মুক্তিযুদ্ধে যাননি কিন্তু ছেলেকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সঁপে দিয়েছেন। এমন আরও অনেক মা আছেন। ইতিহাসে নারীদের অনেক অবদান আছে যা অনেকেই জানেন না। শিক্ষাব্যবস্থা, বাংলা ভাষা ও ইতিহাসের প্রতি অবহেলার কথা উলেস্নখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ রয়ে গেছে। বর্তমান প্রজন্ম ইতিহাস বিমুখ হয়ে আছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষা অবহেলিত। ইউজিসির চেয়ারম্যান কাজী শহীদুলস্নাহ বলেন, একুশ শতকে নারীদের অবদান অনেক। এটা রেকর্ড করে রাখতে হবে যাতে পরবর্তী প্রজন্ম নারীদের অবদান সম্পর্কে জানতে পারে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইতিহাস পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন ইতিহাস পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ইতিহাসবিদসহ ভারতের বিভিন্ন ইতিহাসবিদ উপস্থিত ছিলেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।