নয় দিন অনশনে অসুস্থ ১৮১ শিক্ষক

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০৭

যাযাদি রিপোর্ট
প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়া শিক্ষকরা -যাযাদি

নেত্রকোনা সদরের শালজান বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৯২ সালে থেকে শিক্ষকতা করছেন অখিল পাল। ২৬ বছর শিক্ষকতা করে কোনো বেতন-ভাতা না পেয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র-ছাত্রী পড়িয়ে, কখনও-সখনও অন্যের কৃষিজমিতে রোজ খেটে তার সংসার চলে। আর দুই বছর পর অবসরে যাবেন তিনি। সোমবার অখিল পালের সঙ্গে দেখা হয় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। তার মতো কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষিকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছেন। জাতীয়করণ হলে তারা বেতন-ভাতা পাবেন। ২০১৩ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ থেকে বাদপড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা তারা। ২৩ দিন ধরে টানা তারা আন্দোলন করে আসছেন। বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে তারা আন্দোলন করছেন। সমিতির মহাসচিব মো. কামাল হোসেন জানান, খোলা আকাশের নিচে এভাবে আন্দোলন করতে গিয়ে গত ২২ দিনে ১৮১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শিক্ষকরা জানান, গত ১৬ জুন তারা অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। ২৮ জুন পর্যন্ত টানা ১৩ দিন অবস্থান ধর্মঘট করেন। দাবি-দাওয়া না মানায় ২৯ জুন প্রতীকী অনশন করেন। তাতেও কাজ না হলে ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত অনশন করেন তারা। তারপরও দাবি না মানায় ৩ জুলাই থেকে আজ (সোমবার) পর্যন্ত আমরণ অনশন করে চলেছেন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসব শিক্ষকরা। প্রতীকী অনশন ছাড়া তারা মোট ৯ দিন ধরে অনশনে রয়েছেন। আমরণ অনশনের পাশাপাশি তারা সেখানে স্স্নোগানও দিচ্ছেন। স্স্নোগানে শিক্ষকরা বলছেন, 'আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে; চাকরি আছে বেতন নাই, এমন কোনো দেশ নাই; এক দেশে দুই নীতি, তা হবে না, তা হবে না; কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না।' সমিতির মহাসচিব কামাল হোসেন বলেন, '২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ২৬ হাজার ৯১৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেয় সরকার। সিদ্ধান্ত হয়, তিন ধাপে বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়গুলোর সমপর্যায়ের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ওই সময় কিছু কর্মকর্তার কর্মস্থলে না থাকা এবং কিছু কর্মকর্তার অবহেলার কারণে তৃতীয় ধাপ থেকে কিছু বেসরকারি বিদ্যালয় বাদ পড়ে।' বাদপড়া এসব বেসরকারি বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।