হালদা দূষণ

হাটহাজারীর বিদু্যৎকেন্দ্র বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বর্জ্য তেল নিঃসরণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী দূষণের অভিযোগে হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার পস্ন্যান্টকে ২০ লাখ টাকা অর্থদন্ড করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পাশাপাশি ইটিপি নির্মাণ এবং অয়েল সেপারেটর কার্যকর না করা পর্যন্ত বিদু্যৎকেন্দ্রটি বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নদী দূষণের বিষয়ে বুধবার শুনানি শেষে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোয়াজ্জম হোসাইন এ নির্দেশ দেন। হাটহাজারী পিকিং পাওয়ার পস্ন্যান্টের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক শফিউদ্দিন আহমদ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মো. এরফানুল কিবরিয়া শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। তবে শুনানির পর তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মুক্তাদির হাসান বলেন, কয়েকদিন আগে সরেজমিন পরিদর্শনে পাওয়ার পস্ন্যান্টের অপরিশোধিত বর্জ্যে নদী দূষণের প্রমাণ মিলেছে। 'নদী দূষণ ও ইটিপি কার্যকর না থাকায় হাটহাজারী পাওয়ার পস্ন্যান্টকে শুনানি শেষে জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ইটিপি নির্মাণ এবং অয়েল সেপারেটর কার্যকর না করা পর্যন্ত পাওয়ার পস্ন্যান্টটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।' গত ৯ জুলাই হাটহাজারীর বিদু্যৎকেন্দ্রটির বর্জ্য তেলে হালদা দূষণের প্রমাণ পাওয়ার পর ওইদিনই অধিপ্তরের পরিচালক আজাদুর রহমান মলিস্নক কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষকে ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে নোটিশ দেন। বিদু্যৎকেন্দ্রটি থেকে হালদা নদী সংলগ্ন মরা ছড়া খালে বর্জ্য তেল ফেলার অভিযোগ পেয়ে ওইদিন সকালে ঘটনাস্থল হাটহাজারীর ১১ মাইল এলাকায় মরা ছড়া খাল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন। সকালে বৃষ্টির মধ্যে হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার পস্ন্যান্ট থেকে মরা ছড়া খালে বর্জ্য তেল ছাড়া হয় বলে ওইদিন তিনি জানিয়েছিলেন। ছবি তুলে ও ভিডিও করে বিদু্যৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা তেল ছাড়া বন্ধ করে। যে নালা দিয়ে খালে তেল ছাড়া হয় সেটি তাৎক্ষণিকভাবে ভরাট করে দিয়েছি, বলেছিলেন ইউএনও রুহুল আমিন। হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়াও বলেছিলেন, বেশি বৃষ্টি হলেই তারা গোপনে বর্জ্য তেল ছেড়ে দেয়। তবে বিদু্যৎকেন্দ্রটি থেকে 'ইচ্ছাকৃতভাবে তেল ছাড়া হয়নি' বলে সে সময় দাবি করেন হাটহাজারী পিকিং পাওয়ার পস্ন্যান্টের ব্যবস্থাপক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শফি উদ্দিন আহমদ। বেশি বৃষ্টি হওয়ায় কেন্দ্রের ভেতরের নালাগুলো ও রাস্তা পানিতে ভেসে যাওয়ায় তেল বাইরে চলে গেছে বলে তার ভাষ্য ছিল। ২০১২ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদু্যৎ কেন্দ্রটি উদ্বোধনের পর ওই বছরই দুই দফা কেন্দ্রটিকে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে নোটিশ দেয়া হলেও কোনো কাজ হয়নি। জানা গেছে, ওই সময় দূষণের অভিযোগে পস্ন্যান্টটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইটিপি নির্মাণের শর্তে জরিমানা মওকুফ করা হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে ইটিপির নকশার অনুমোদন নেয়া হলেও তা এখনো নির্মাণ করা হয়নি। ইটিপি এবং অয়েল সেপারেটর না থাকায় পাওয়ার পস্ন্যান্টটির বর্জ্য মরা খালের মাধ্যমে হালদা নদীতে মিশছে।