কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি রোধে আইন করার দাবি

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষায় আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন করার দাবি জানিয়েছে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার মোর্চা জেন্ডার পস্ন্যাটফর্ম। শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। জেন্ডার পস্ন্যাটফর্মে আছে- বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ), আওয়াজ ফাউন্ডেশন, কর্মজীবী নারী এবং ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেন্ডার পস্ন্যাটফর্মের সমন্বয়ক আইনুন নাহার। তিনি যৌন প্রতিরোধে আইন না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির মাত্রা, এর সংখ্যা ও বীভৎসতা দিন দিন বাড়ছে এবং এখন তা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রয়েছে। সম্প্রতি সোনাগাজীতে নুসরাত হত্যাকান্ড গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ভুক্তভোগীর প্রচেষ্টার কারণে। পাশাপাশি আরও কয়েকটি মাদ্রাসায় শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের ওপর সংগঠিত যৌন সহিংসতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আইনুন নাহার বলেন, ২০০৮ সালে মহিলা আইনজীবী সমিতি যৌন হয়রানিমুক্ত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছিল। ৎ এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ১৪ মে উচ্চ আদালত কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ১১টি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। তাতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন করার কথা বলা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের কোনো আইন হয়নি। আবার এ বিষয়ে উচ্চ আদালত যে ১১টি নির্দেশনা দিয়েছিল সেগুলোও কোনো প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পোশাক কারখানার ২২ ভাগ নারী শ্রমিক কর্মক্ষেত্র বা চলতি পথে যৌন হয়রানির শিকার হন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চার বছরে ১৭ হাজার ৩০০টির বেশি ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। অথচ শাস্তি হয়েছে মাত্র ৬৭৩ জন অপরাধীর। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে ৬৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ৩৭ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইন হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিরোধ কমিটি একটি অত্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে গণ্য হতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম, বিএলএফের মহাসচিব জেড এম কামরুল আনাম, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আকতার, বিলসের পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।