বাড্ডায় তাসলিমাকে পিটিয়ে হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০৫

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটের কাছে মানববন্ধন করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা -যাযাদি

রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দুই সন্তানের জননী চলিস্নশোর্ধ্ব তসলিমার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা। সোমবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটের কাছে কলেজের প্রধান ফটকে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন বলেন, যারা সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন কর্মকান্ড সহ্য করতে পারছে না তারাই এমন গুজব ছড়িয়ে দেশটাকে অস্থিতিশীল করছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই নানা ষড়যন্ত্র চলছিল; এখনও তা চলমান আছে। 'দেশের সহজ সরল মানুষকে অবৈজ্ঞানিক কথাবার্তায় উত্তেজিত করা হচ্ছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। একদিকে জনজীবন অতিষ্ঠ করার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত চলছে।' শনিবার সকালে ঢাকার উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে শিশু চোর সন্দেহে তাসলিমাকে (৪২) পিটিয়ে আহত করে স্থানীয়রা। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ বলছে, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর ওয়্যারলেস গেটে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তসলিমা। মেয়ের ভর্তির বিষয়ে খবর নিতে ওই স্কুলে গিয়েছিলেন তিনি। বছরের মাঝে ভর্তির খোঁজখবর নিতে যাওয়ায় কয়েকজন অভিভাবকের সন্দেহ হলে তারা তাকে প্রধান শিক্ষিকার কাছে নিয়ে যান। এর মধ্যে 'ছেলেধরা' গুজব ছড়িয়ে পড়লে আশপাশ থেকে শত শত লোক ছুটে এসে তাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে নিয়ে পেটায়। পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে 'মানুষের মাথা লাগবে' বলে সম্প্রতি ফেসবুকে গুজব ছড়ানো হয়, যাতে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল সরকার। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা শহরে এক যুবকের ব্যাগ তলস্নাশি করে 'শিশুর মাথা' পাওয়ার পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। \হএর মধ্যেই শনিবার তসলিমাকে পিটিয়ে মারা হয়। মানববন্ধনে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার মায়া বলেন, একটি অপশক্তি পরিকল্পিতভাবে 'ছেলে ধরার' গুজব ও কল্পকাহিনী ছড়াচ্ছে। এই গুজবের কারণে একের পর এক এমন অপমৃতু্যর ঘটনা ঘটছে। কলেজের উপাধ্যক্ষ আবেদা সুলতানা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গুজবের শিকার প্রতিটি নাগরিকের জন্যই তাদের সমবেদনা। এ ধরনের ঘটনার অচিরেই শাস্তি নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা প্রয়োজন। মানববন্ধনে তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়ল, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত তিতুমীর কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।