ওয়ার্ডভিত্তিক 'চিরুনি অভিযান' শুরু ঢাকার উত্তরে

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে 'চিরুনি অভিযান' কার্যক্রম শুরু করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুলস্নাহ আবু সায়ীদ -সংগৃহীত
এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক 'চিরুনি অভিযান' কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের ডা. ফজলে রাব্বি পার্ক থেকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে অধ্যাপক আবদুলস্নাহ আবু সায়ীদ প্রধান অতিথি থেকে বিশেষ এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। 'ওয়ার্ডভিত্তিক এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান' বা চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি বস্নকে ভাগ করে প্রতিটি বস্নককে ১০টি সাব-বস্নকে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন ১টি বস্নকের ১০টি সাব-বস্নকের প্রতিটি বাসা-বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, খোলা জায়গা ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার ও এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করা হবে। এভাবে ১০ দিনে এ ওয়ার্ডটি সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার ও এডিস মশার লার্ভা নির্মূল করা হবে বলে জানানো হয় ডিএনসিসির পক্ষ থেকে। উদ্বোধনের পর অধ্যাপক আবদুলস্নাহ আবু সায়ীদ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে এর জন্মস্থান ধ্বংস করে দিতে হবে। আর নিজেদেরও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এডিস মশার সম্ভাব্য প্রজননস্থল ধ্বংস ও পরিচ্ছন্নতা নিরবচ্ছিন্নভাবে আমাদেরই করে যেতে হবে। পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আলোকিত মানুষ হওয়া যাবে উলেস্নখ করে আবু সায়ীদ বলেন, আমরা যখন 'আলোকিত মানুষ চাই' স্স্নোগানে আন্দোলন করছিলাম, তখন অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করত যে, আলোকিত মানুষ চেয়ে আমরা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম কেন করছিলাম। আমি বলেছিলাম পরিচ্ছন্ন হলেই আলোকিত মানুষ হওয়া যায়। অপরিচ্ছন্ন মানুষ আলোকিত মানুষ হতে পারে না। \হআমাদের মধ্যে বিরাট এক নোংরামির অভ্যাস আছে। খুল অল্প কয়েক জনকে বাদ দিলে আমাদের কারোও বাড়িঘর পরিপাটি না। আমাদের সমাজেই একটা বিশৃঙ্খলা আছে। এসব থেকে নিস্তার পেতে হলে আশপাশের সবকিছু আমাদেরই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে জানানোর পর তারা এটার প্রশংসা করেছে। তবে এমন কার্যক্রম দীর্ঘস্থায়ী হবে যদি স্থানীয় জনগণ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। তারা এগিয়ে না আসলে আমরা যত যাই করি না কেন, কোনো উদ্যোগই দীর্ঘস্থায়ী হবে না। '১০ দিনের প্রথম ৭ দিন আমরা কাজ করব। কোথাও গিয়ে লার্ভা পেলে আমরা স্টিকার লাগিয়ে দেব। এরপর তারা নিজেদের শুধরে নেবেন। যদি শুধরে না নেন তাহলে তিন দিন পর গিয়ে আমরা ফাইন (জরিমানা) করব। দুটি ভবনের মাঝের 'নো ম্যানস ল্যান্ড' পরিষ্কারের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের না। আর ভবন মালিকরা এগিয়ে না এলে সেটি আমাদের পক্ষেও সম্ভব হবে না।' সিটি করপোরেশনের কর্মীদের ভবনের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিতে ভবন মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আতিক বলেন, এরপরেও আমাদের কর্মীরা আপনাদের ভবনে যাবেন। তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিন। কোথাও কোথাও পরিষ্কার করতে গেলে, ওষুধ দিতে গেলে আমাদের কর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এটা ঠিক না। আমাদের কর্মীদের সঙ্গে যথাযথ পরিচয়পত্র থাকে। সেগুলো দেখে তাদের প্রবেশ করতে দিন।' চিরুনি অভিযান কার্যক্রমের পর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র পার্ক ও এর আশপাশের এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসময় তার সঙ্গে ডিএনসিসির সচিব রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মঞ্জুর হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।