৪ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রকল্প

গ্রামাঞ্চলে 'ফাইভ-জি' পৌঁছাতে ৩২৮২ কোটি টাকা চায় টেলিটক

দেশের প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক প্রযুক্তির সেবার আওতায় আনা, দেশের প্রতিটি তরুণকে প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর, প্রতিটি সেবাকে ডিজিটাল পস্ন্যাটফর্মে নিয়ে এসে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা এবং সাইবার ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করা।

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে 'আমার গ্রাম, আমার শহর' বাস্তবায়নে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে দেশজুড়ে 'ফাইভ-জি' নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে সরকার। এ লক্ষ্যে ৩ হাজার ২৮২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়েছে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড (টিবিএল)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে শহরাঞ্চলে বিদ্যমান টেলিটকের 'ফোর-জি' নেটওয়ার্ক ইউনিয়ন, গ্রাম পর্যন্ত প্রসারিত করে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে সুলভমূল্যে দ্রম্নতগতির ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সরকার ঘোষিত লক্ষ্য অনুসারে, ২০২১-২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিটা গ্রামে ফাইভ-জি প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। টেলিটক সূত্র জানায়, 'গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫-জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন' প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৩ হাজার ২৮২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। কর্মকর্তারা বলছেন, চারটি লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- দেশের প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক প্রযুক্তির সেবার আওতায় আনা, দেশের প্রতিটি তরুণকে প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর, প্রতিটি সেবাকে ডিজিটাল পস্ন্যাটফর্মে নিয়ে এসে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা এবং সাইবার ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করা। গ্রামে 'ফাইভ-জি' পৌঁছে দেয়া প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্ম প্রধান মোহাম্মদ মুসলেহ উদ্দিন বলেন, ''সরকারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহারে 'আমার গ্রাম, আমার শহর' উলেস্নখযোগ্য। এ লক্ষ্যে দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে পঞ্চম প্রজন্মের সুপার ফাস্ট ইন্টারনেট সেবা ফাইভ-জি চালুর লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রকল্পের আওতায় গ্রামে প্রথমে ফোর-জি যাবে। এরপরই ধাপে ধাপে ফাইভ-জি পৌঁছে দেয়া হবে।'' প্রকল্পটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কয়েক ধাপে সভা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়ে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল নিশ্চিত করা হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে দেশের সব মানুষ যেন আধুনিক প্রযুক্তি সেবার উপকারভোগী হয়, তা নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করছে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্র জানায়, দেশের প্রায় ১০ কোটি জনগণ ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ হার গ্রামে বেশি। শহরের তুলনায় গ্রামে ব্যবহারকারীদের ক্রয়ক্ষমতা অনেকাংশে কম, ব্যক্তিমালিকানাধীন অন্য মোবাইল অপারেটররা এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যবসায়িক ও মুনাফা বিবেচনায় নেটওয়ার্ক বিস্তারের মাধ্যমে মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে চায় না। ফলে গ্রামের মানুষরা ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ৯ হাজার ৪১০ সেট টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম কেনা, তিন হাজার বিটিএস সাইট নির্মাণ, ট্রান্সমিশন হাবের জন্য ১০০ সাইট প্রস্তুতকরণ, বৈদু্যতিক সরঞ্জামাদি কেনা, কাস্টমার কেয়ার ৩০ সাইট ও আসবাবপত্র কেনা। সরকার ঘোষিত লক্ষ্য অনুযায়ী, আগামী ২০২১-২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ফাইভ-জি প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ। সূত্র জানায়, বর্তমানে টেলিটকের ভয়েস ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের কভারেজ অন্যান্য অপারেটরের তুলনায় সীমিত। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে কভারেজ খুবই কম। টেলিটকের মোট টাওয়ার বা সাইট সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার। এর মধ্যে টু-জি বিটিএস যন্ত্রপাতি হলো সাড়ে চার হাজার, থ্রি-জি বিটিএস তিন হাজার ৬২টি এবং ফোর-জি বিটিএস এক হাজার ১০০টি। এই টাওয়ার ও টেলিকম যন্ত্রপাতির সংখ্যা অন্যান্য প্রতিযোগীর তুলনায় অত্যন্ত কম।