প্রথম ধাপে চালু হচ্ছে না এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক সৃষ্টি হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি হেমায়েতপুর-কদমতলি-নিমতলী-সিরাজদিখান-মদনগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-মদনপুরে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে চলছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ -বাংলা নিউজ
যাযাদি রিপোর্ট রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) নির্মাণ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে এয়ারপোর্ট রোডের কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত সংযোগ সড়কসহ ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এক্সপ্রেসওয়েটি। চলতি বছরের জুন মাসে প্রথম ধাপে এক্সপ্রেসওয়েটি বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে বনানী পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশ খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বাড়তি টোলের বোঝার কারণে চালু হচ্ছে না প্রথম অংশটি। তাই ২০২২ সালের মার্চ মাসে একযোগে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়েটি খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেতু বিভাগ। সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় নির্মিত হচ্ছে। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কার-মাইক্রোবাসে সর্বনিম্ন ১০০, বড় বাসে ২০০ ও ট্রাকে ৩০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে বনানী পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশে এ টোল পরিশোধ করতে হবে। এ স্বল্প দূরত্বে এত বেশি টোল অনেকেই পরিশোধ করবে না বিধায় এ অংশটুকু চালু করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে পুরো ২৬ কিলোমিটার রুটের জন্য মাইক্রোবাসে সর্বনিম্ন ১২৫, বড় বাসে ২৫০ ও বড় ট্রাকে ৫০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৬ কিলোমিটার রুটের জন্য টোল নির্ধারণ ঠিক আছে। তবে দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশের জন্য টোলের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় বলেই প্রথম ধাপে চালু হচ্ছে না এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সেতু বিভাগ সূত্র আরও জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েতে বড় ট্রাকে প্রতি কিলোমিটারে টোল ২১ টাকা, বড় বাসে ১৫ টাকা ও মাঝারি ট্রাকে ১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সামগ্রিকভাবে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। মোটরসাইকেল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে পারবে না। এমনকি ওভারলোডেড কোনো ট্রাকও উঠতে পারবে না এ উড়াল সড়কে। উড়ালসড়কে ওভারলোড নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র (পোর্টেবল ওয়ে ব্রিজ বা ওজন পরিমাপকযন্ত্র) স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এমএস আকতার বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আমরা আশা করছি, ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হয়ে যাবে। ইতোমধেই প্রকল্পের কাজ সার্বিকভাবে ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত খুলে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হয় কেউ এই স্বল্প দূরত্বপথে মাইক্রোবাসে ১০০ টাকা টোল দিতে চাইবে না। তাই মনে করি, একসঙ্গে উন্মুক্ত করাই ভালো। তারপরও পিপিপি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে প্রকল্পটি। সুতরাং সংশ্লিষ্টরাই ভালো বুঝবেন। দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার ও শেষ ধাপে মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক সৃষ্টি হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি হেমায়েতপুর-কদমতলি-নিমতলী-সিরাজদিখান-মদনগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-মদনপুরে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চল এবং পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করবে। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা যানবাহনগুলো ঢাকাকে বাইপাস করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে। এর ফলে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অংশে যানজট দূর হবে। প্রকল্পের রুটগুলো হচ্ছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেঁজগাও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়দাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী)।