হেল্পলাইনে এক বছরে ৩৪ হাজার মানুষকে সেবা

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট বিনামূল্যে টোল ফ্রি হটলাইনের মাধ্যমে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ৩৩ হাজার ৯৭৯ জনকে আইনগত পরামর্শ ও তথ্যসেবা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা প্রায় আট হাজার। সম্প্রতি জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সরকারি আইনি সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন '১৬৪৩০' চালু করা হয়। ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল এ হেল্পলাইনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে ২৪ ঘণ্টা জাতীয় পর্যায়ে আইনগত সহায়তা সেবা দিচ্ছে টোল ফ্রি এ হেল্পলাইন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ হেল্পলাইন উদ্বোধনের পর থেকে সারাদেশের অসংখ্য মানুষকে আইনি পরামর্শ, তথ্য সেবা ও লিগ্যাল কাউন্সিলিং সেবা দেয়া হচ্ছে, যা অসহায় মানুষের আইনি অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর অবদান রাখছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ কলসেন্টার থেকে ৩৩ হাজার ৯৭৯ জনকে আইনগত পরামর্শ ও তথ্য সেবা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭৬৭ জন নারী, ২৫ হাজার ৪৯৫ জন পুরুষ, ৬৫১ জন শিশু ও ১৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ রয়েছেন। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন ও নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ জনগোষ্ঠীকে আইনগত সহায়তা দিতে ২০০০ সালে 'আইনগত সহায়তা প্রদান' আইন প্রণয়ন করা হয়। এ আইনের আওতা সরকার 'জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা' প্রতিষ্ঠা করে। দরিদ্র-অসহায়দের আইনের আশ্রয় ও বিচার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এ সংস্থার অধীনে প্রত্যেক জেলায় জজকোর্ট প্রাঙ্গণে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে সহকারী জজ/সিনিয়র সহকারী জজ পদমর্যাদার একজন বিচারককে 'লিগ্যাল এইড অফিসার' হিসেবে পদায়ন করা হয়। এ ছাড়া, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সেবা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়েছে। চৌকি আদালত ও শ্রম আদালতে গঠিত হয়েছে বিশেষ কমিটি। এছাড়া সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারকে সামনে রেখে দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে আইনি সহায়তা দিতে সংস্থাটি 'বিডি লিগ্যাল এইড' নামে একটি অ্যাপও উদ্বোধন করেছে। এতে দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে অ্যাপটির সাহায্যে ঘরে বসেই বিনা খরচে আইনি সহায়তা পাবেন অসহায় ও অসচ্ছল বিচারপ্রার্থী। গুগল পেস্নস্টোর থেকে অ্যাপিস্নকেশনটি স্মার্টফোনে ইনস্টলের পর সহজেই বাংলা বা ইংরেজি ভাষায় এটি ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপটি ওপেনের সঙ্গে সঙ্গে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাওয়ার হেল্প লাইন নম্বর '১৬৪৩০' দেখা যাবে। নম্বর মনে রাখার ঝামেলা এড়াতে এখান থেকে লিগ্যাল এইড অফিসে ফোন বা মেসেজ পাঠিয়ে আইনি সহায়তা চাওয়া ও পাওয়া যাবে। এরপর অ্যাপটির দ্বিতীয় অপশন থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা লিগ্যাল এইড অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শের ঠিকানা পাওয়া যাবে। আদালতে মামলার সর্বশেষ আপডেট জানতে বিচার প্রার্থীদের প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই ভোগান্তি এড়াতে লিগ্যাল এইড অফিসে দায়ের করা অভিযোগ কিংবা মামলাটির নম্বর সার্চ করে এর সর্বশেষ তথ্য জানা যাবে অ্যাপটির তৃতীয় অপশনটি থেকে। চতুর্থ অপশনের সাহায্যে আবেদনপত্রের প্রয়োজনীয় ঘরগুলো পূরণ করে ঘরে বসেই আপনার অভিযোগ লিগ্যাল এইড অফিসে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। এর পরবর্তী অপশনেই থাকছে জাতীয় লিগ্যাল এইড, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, দেশের বিচার বিভাগীয় পোর্টাল এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট। এখান থেকে ক্লিক করে ওইসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাবে। অ্যাপটির ষষ্ঠ অপশনটি কানেক্টেড রয়েছে লিগ্যাল এইডের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে। ওই চ্যানেলে লিগ্যাল এইড সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্যচিত্র রয়েছে। আর অ্যাপটির সর্বশেষ অপশনের সঙ্গে লিগ্যাল এইডের ফেসবুক পেইজ কানেক্টেড রাখা হয়েছে। এতে অ্যাপটির মাধ্যমে যে কেউ সরাসরি লিগ্যাল এইডের ফেসবুক পেজে গিয়ে সেখান থেকে মেসেজ অপশনে যেতে পারবেন এবং অভিযোগ জানাতে পারবেন। লিগ্যাল এইডে আইনি সহায়তা চেয়ে আবেদন জানানোর পর দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে আবেদন গ্রহণের বার্তা জানিয়ে দেয় সংস্থাটি। আবেদনকারীর আবেদন অনুমোদন পেলে সঙ্গে সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কল কিংবা মেসেজ দিয়ে এ তথ্যও জানিয়ে দেয়া হয়।