অনুপ্রবেশকারী ২ জাহাজ: তদন্তে কমিটি গঠন

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আটক জাহাজ সি ইউং ও সি ভিউ -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট বাংলাদেশের জলসীমানায় মিথ্যা ডিক্লেয়ারেশন দিয়ে অনুপ্রবেশকারী দুই মাছ ধরার জাহাজের তদন্তে কাস্টমসের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। রোববার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এ কথা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছুল আলম মন্ডল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইমস বিভাগের সচিব খোরশেদ আলম। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কোস্টগার্ড, নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌপুলিশের প্রতিনিধিরা। সভা শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'বিদেশি দুটি মাছ ধরার জাহাজ মিথ্যা ডিক্লেয়ারেশন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটা আমরা তদন্ত করে ধরতে পেরেছি। এটি নিয়ে আমরা আজ আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং করেছি। মিটিংয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটির প্রধান করা হয়েছে কাস্টমসকে। জাহাজ দুটি কাস্টমসে মিথ্যা ডিক্লেয়ারেশন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তার আইনগত কার্যকারিতা কী আছে জেনে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি আমাদের জানাবে এরপর আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাব।' তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে কোনো ফিশিং জাহাজ বাংলাদেশে মেরামত বা অন্য কোনো কারণে প্রবেশ করতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা আমাদের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানাবেন। তখন আমাদের মতামতের ভিত্তিতে অনুমতি পাবে। আটক করা মাছ ধরার জাহাজের কোন দেশের পতাকাবাহী ছিল জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্যামেরুনের পতাকা নিয়ে আসছে। সেটা এখন নামিয়ে ফেলেছে। তারা এখন চিটাগাং কন্টিনেন্টাল ডকইয়ার্ডে অবস্থান করছে। 'এ ব্যাপারে আমাদের সব বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কাস্টমস সবাই অ্যাকশনে যাচ্ছে। জাহাজ দুটির যে নাম দেয়া আছে তা হলো 'সি ইউং ও সি ভিউ'। এগুলোর ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা কী এই নাম টেম্পারিং করে নাম পরিবর্তন করেছে কি না এসব বিষয়েও তদন্ত করা হবে। তারা আমাদের জলসীমানায় মাছ ধরেনি।' জাহাজে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ছিল কি না ও তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'জাহাজে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র পাইনি। তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল সেটাই তো আমরা এখন দেখব। এজন্যই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাস্টমসের নেতৃত্বে ৭/৯ সদস্য হতে পারে। জাহাজ দুটি কোন দেশের সত্যিকারের মালিকানা সেটা তদন্তের পর জানা যাবে।' বাংলাদেশের সমুদ্র নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, 'আমাদের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি বা হুমকির মুখে নেই। তারা একটা মিথ্যা ডিক্লেয়ারেশন দিয়েছে। আমরা যখন তদন্ত করি তখন এটা ধরা পড়ে। তখন থেকেই তারা যেন কোনো মুভ করতে না পারে বা জাহাজ থেকে কোনো কিছু লোড আনলোড না করতে পারে সেটার জন্য আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও কাস্টমস পর্যবেক্ষণে রেখেছে।' জাহাজ দুটি কী বলে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা তাদের ইঞ্জিন নষ্ট হয়েছে। এ সমস্যায় চলতে পারছে না মেরামত করতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটা আন্তর্জাতিক আইনেও পড়ে। কিন্তু তারা অনেক কিছু মিথ্যা বলেছে তাই আটক করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে মিথ্যা বলেছে। তারা কোন দেশ থেকে এসেছে, কোথায় যাবে, কী করবে এসব বিষয়ে মিথ্যা বলেছে। তখন সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করা হয়নি। কারণ এগুলো করলে পোর্টে বন্ধ হয়ে যায়। তাহলে আমাদের বাইরের জাহাজগুলো প্রবেশ করতে পারবে না। তাই এখন তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হচ্ছে। আমরা এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও খোঁজখবর নিচ্ছি। গত ২০ আগস্ট দুটি মাছ ধরার জাহাজ বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে। এরপর ২৫ আগস্ট এখন জাহাজ দুটি চট্টগ্রামে রয়েছে।