হৃদরোগ চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক নারী চিকিৎসক চান স্পিকার

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী -ফোকাস বাংলা
হৃদরোগ চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক নারী চিকিৎসক তৈরির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, হৃদরোগ চিকিৎসায় নারী চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। তারা নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারে। এ সময় তিনি হৃদরোগ চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক নারী চিকিৎসক তৈরি, তাদের জন্য অনুকূল কর্মপরিবেশ ও অসংক্রামক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে 'ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত উইমেন অ্যাজ ওয়ান, বাংলদেশ চ্যাপ্টার'র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি চিকিৎসকদের সাফল্যের কথা উলেস্নখ করে বলেন, 'নারী চিকিৎসকরা দেশের সম্পদ। মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। হৃদরোগ চিকিৎসায় তারা নারী রোগীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও স্বাস্থ্যসেবা দিতে সক্ষম।' এজন্য হৃদরোগ চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক নারী চিকিৎসক তৈরি, তাদের জন্য অনুকূল কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং হৃদরোগ চিকিৎসা সংক্রান্ত উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ও অসংক্রামক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সাম্প্রতিক সংক্রামক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমরা সফল হয়েছি। জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাপন প্রণালিতে পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে সংক্রামক বিভিন্ন রোগ বেড়ে চলেছে। সে কারণে এসব রোগের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করা প্রয়োজন।' স্পিকার বলেন, 'বাংলাদেশে আজ নারী উন্নয়ন সব ক্ষেত্রে দৃশ্যমান। এদেশের নারীরা অনেক নতুন ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় কাজ করছেন।' তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে উলেস্নখ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ১২ হাজারের অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৩২ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে, যা তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।' তিনি আরও বলেন, 'সব প্রতিকূলতা জয় করে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে হৃদরোগের মতো চিকিৎসায় নারীরা এগিয়ে আসতে উৎসাহী হবে। কেননা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে হৃদরোগের চিকিৎসায় নারী চিকিৎসকের সংখ্যা অপ্রতুল।' এ ক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ, আয় বৈষম্য নিরসন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। ড. শিরীন শারমিন বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে নারী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি সচেতনতামূলক ফোরাম উইমেন অ্যাজ ওয়ান বাংলাদেশ চ্যাপ্টার গঠন করা হয়েছে, যা এক অনন্য উদ্যোগ। এ ফোরামের কার্যক্রম বাংলাদেশে নারী হৃদরোগীদের ও নারী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এ উদ্যোগের ফলে তৃণমূল পর্যায়ে নারীগণ হৃদরোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা গ্রহণে অধিকতর সচেতন হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। উইমেন অ্যাজ ওয়ান ফোরাম নারীদের হৃদরোগ চিকিৎসায় নব দিগন্ত উন্মোচন করবে বলেও তিনি উলেস্নখ করেন। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অপরাজিতা হক এমপি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উইমেন অ্যাজ ওয়ান বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফজিলা তুন নেসা মালিক। অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে আসা নারী হৃদরোগ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।